ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন সাজে রংপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো
মাটি মামুন রংপুর।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদে দর্শনার্থীদের পদারচারণায় মুখরীত হয়নি রংপুরের বিনোদনকেন্দ্রগুলো।এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় নেই বিধিনিষেধ।তাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসব ঘিরে দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ হবে-এমন আশায় নতুন সাজে সেজেছে রংপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
শেষ মুহূর্তে নতুন রঙ লাগানো হচ্ছে রাইডগুলোতে, চলছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম।
ঈদের জন্য প্রস্তুত রংপুর নগরীর চিড়িয়াখানা, বিনোদন উদ্যান শিশু পার্ক, চিকলি পার্ক, সুরভী উদ্যান, রুপকথা, আলীবাবা থিম পার্ক, প্রয়াস, তাজহাট জমিদার বাড়ি, জেলার মধ্যে তিস্তা পার্ক, তিস্তা রেলসেতু, গংগাচড়া মহিপুর সেতু ও চরাঞ্চল, ভিন্ন জগৎ, আনন্দ নগরসহ সব বিনোদন ও শিশু পার্কগুলো।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গত দুই বছর ধরে প্রায় সময় বন্ধ থাকা পার্ক, বিনোদন কেন্দ্রের রাইডগুলোতে জীর্ণতা ভর করেছিল।বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল অঙ্গসজ্জা। তাতে নতুন করে লাগছে রঙের ছোঁয়া।
রংপুর চিড়িয়াখানা শিশু পার্কের স্পাইডার ক্রেডল, মিউজিক ফাইটার প্লেন, ডেঞ্জার রোলার রোড, থ্রিডি মুভি সিনেমা, ইলেকট্রিক বুলেট ট্রেন, মেরিগো রাউন্ড, রাক্ষসের মুখসহ অন্যান্য রাইডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবারের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ভুতের ঘর সংসার।
শিশুসহ সবধরনের বিনোদন প্রিয়দের জন্য ৩ মাস আগে এই ভুতের ঘর সংসার উদ্বোধন করা হলেও এটাই ভুতের ঘর সংসারের প্রথম ঈদ। ভুতের ঘর সংসার মানে রোমাঞ্চকর বিষয়।
শিশু পার্কের ঠিকাদার রমজান আলী তুহিন এই প্রতিবেদক কে জানান, প্রায় দুই বছরের খরা কাটিয়ে এবার উৎকণ্ঠাহীন ঈদ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।প্রায় সব রাইডে জং ধরেছিল, সেগুলো রঙ করে নতুন করে সাজানো হচ্ছে ।
তবে শিশুদের জন্য বেশি আকর্ষণীয় করে তৈরি করা হয়েছে ভুতের ঘর সংসার। ভুতের ঘর সংসারে ঢুকলে সবার ভালো লাগবে।রংপুর চিড়িয়াখানার ঠিকাদার হযরত আলী জানান, চিড়িয়াখানার সকল প্রকার পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ চলছে। আশাকরি প্রচুর বিনোদন প্রিয় মানুষের সমাগম ঘটবে।
নগরীর ইসলামপুর হনুমানতলা ও নীলকন্ঠ সাগরপাড়ায় অবস্থিত চিকলী বিল।
এই বিলকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে চিকলী পার্ক।পার্কের মধ্যে করা হয়েছে ওয়াটার পার্ক।ঈদে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে আরও ঢেলে সাজানো হয়েছে।
সেই সঙ্গে চিকলী পার্কে নতুন নুতন রাইড যুক্ত করা হয়েছে।
সুরভী উদ্যানের তত্বাবধায়ক আইয়ুব আলী জানান, ঈদ এলে সুরভী উদ্যানে শিশুসহ নানা বয়সী মানুষের সমাগম ঘটে।জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুরভী উদ্যানের শিশুদের জন্য রাইডগুলো পরিষ্কার-পরিছন্ন করা হয়েছে।
রংপুর নগরীর বাহিরে গংগাচড়া মহিপুর সেতু ও চরকে ঘিরে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে ঈদে।সেতুর পাশে ও চরকে ঘিরে তৈরি হয়েছে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট। এর মধ্যে অন্যতম ব্রিজ বাইডস।বিনোদন প্রিয়দের বসার জন্য তৈরি করা হয়েছে মনোরম পরিবেশে চেয়ার ও টেবিল। বড় আকৃতির একটি লাভ তৈরি করা হয়েছে।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে তিস্তা বাজার সড়কে দৃষ্টিনন্দন তিস্তা পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে।রংপুর থেকে কুড়িগ্রাম তিস্তা সড়ক সেতুর হাতের বাঁয়ে বাঁধের কোলঘেঁষা সুসজ্জিত এই তিস্তা পার্ক।
এটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি বিনোদনের জন্য চমৎকার ও নজরকাড়া।
তিস্তা পার্কের চেয়ারম্যান সেরাফুল ইসলাম হিমেল বলেন, ‘বিনোদনপ্রিয় মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে তিস্তা পার্কটিকে সাজানো হয়েছে।একই সঙ্গে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জন্য পার্কে রয়েছে আকর্ষণীয় রাইড।
সাড়ে ছয় একর জমির ওপর গড়ে তোলা এই পার্ক ঘিরে আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।রংপুর অঞ্চলে নদীকেন্দ্রিক এ রকম বিনোদন কেন্দ্র বা পার্ক আরও বেশি করে গড়ে তোলা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে উত্তরের পর্যটনশিল্প বেশ সমৃদ্ধ হবে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়াও ঈদকে ঘিরে প্রস্তুত ভিন্ন জগৎ, আনন্দ নগর, নাচনিয়ার বিলসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো।ঈদের দিনসহ পরবর্তিতে রংপুর নগরীর ও জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও নির্বিঘ্নে বিনোদনের ব্যবস্থা করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ দায়িত্বে থাকবে।
পাশাপাশি নগর ও জেলা পুলিশও দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।