কক্সবাজারে ভূয়া র্যাব পরিচয়ে গণধর্ষণ ও ছিনতাই ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে আটক করেছে র্যাব-১৫
আমিনুল্লাহ,কক্সবাজার:
র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় একটি চক্র বেশ কিছুদিন যাবৎ ভূয়া র্যাব পরিচয়ে ছিনতাই ও ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কার্যক্রম সংঘঠিত করে আসছে। এ বিষয়ে ভূক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি র্যাবের নিকট লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করলে র্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে নিবিড় অনুসন্ধান শুরু করে।
অনুসন্ধানের একপর্যায়ে র্যাবের আভিযানিক দল জানতে পারে যে, উক্ত চক্রের দুইজন সদস্য কক্সবাজার পৌরসভার বাস টার্মিনাল এলাকার রাজা গেস্ট হাউজে অবস্থান করে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অপরাধীদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর গত ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখ অনুমান ১৮.০৫ ঘটিকায় র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ভূয়া র্যাব পরিচয়দানকারী চক্রটিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত চক্রটির নিকট হতে ছিনতাইকৃত *০১টি Iphone11, ০১টি Redmi Note 8 pro, নগদ ৩,৩০০/-টাকা এবং ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ০১টি Hero Hunk-150cc মোটর সাইকেল (হেড লাইটের উপরে র্যাব মনোগ্রাম লাগানো) ও ০১টি র্যাব মনোগ্রাম লাগানো ধূসর রংয়ের কলারসহ গেঞ্জি উদ্ধার* করে।
ধৃত চক্রের সদস্যদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষ্য প্রমাণে গ্রেফতারকৃত দুইজন আসামী কর্তৃক সংঘঠিত অপরাধের ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় কক্সবাজারের সদর উপজেলাধীন ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকার বাসিন্দা জনৈক মোঃ ফজল করিম (২৮) নামে এক ব্যক্তি সুগন্ধা বীচ হতে সিএনজি অটোযোগে নিজ বাসায় ফেরার পথে বাস টার্মিনালের অদূরে যানবাহন থেকে পৌর টোল আদায়কারী টোল আদায়ের লক্ষ্যে উক্ত সিএনজি’টি থামায়। এ সময় ভূয়া র্যাব সদস্য পরিচয়দানকারী দুইজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল যোগে সেখানে হাজির হয়। হেড লাইটের উপরে র্যাব মনোগ্রাম লাগানো মোটর সাইকেলে আগত ০২ জনের মধ্যে একজন র্যাবের লগো সম্বলিত টি-শার্ট পরিহিত ছিল এবং নিজেদের র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে সিএনজি’র যাত্রী ফজল করিম এর কাছ থেকে নগদ ৯,০০০/- (নয় হাজার) টাকা, ০১টি Iphone11 এবং ০১টি Redmi Note 8 pro মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘঠিত করে তারা পুনরায় রাজা গেস্ট হাউজে ফিরে যায়। পরবর্তীতে, একই তারিখ রাত অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় উক্ত গেস্ট হাউজের অন্য একটি কক্ষে অবস্থানরত রাঙ্গামাটি জেলা থেকে আগত জনৈকা ফাতেমা নামে এক পর্যটকের নিকট নিজেদের র্যাব পরিচয় দেয় এবং বর্ণিত পর্যটকের পরিচয় ও অন্যান্য বিষয়াদি জিজ্ঞাসাবাদের অজুহাতে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার উক্ত ভিকটিম’সহ রাজা গেস্ট হাউজের ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত ধর্ষণের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীরা উক্ত ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং ছিনতাই এর ঘটনার সাথে পৌর টোল আদায়কারী জাহিদুল ইসলাম এর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানায়। ঘটনার পর থেকে পলাতক পৌর টোল আদায়কারী জাহিদুল ইসলাম’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে।
ভূয়া র্যাব পরিচয়ে গণধর্ষণ ও ছিনতাই ঘটনার সাথে জড়িত চক্রটির বিস্তারিত পরিচয় *১। মোঃ জাহিদ হাসান (২৮)*, পিতা-মোঃ ইউসুফ আলী, মাতা-জিয়াসমিন, সাং-চৌধুরী পাড়া, ইউসুফ আর্মির বাড়ী, থানা-শিবগঞ্জ, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং *২। মোঃ সানোয়ার হাসান @ সনি (৩০)*, পিতা-মোঃ আব্দুল লতিফ, মাতা-রোকসানা বেগম, সাং-চক নাধড়া, আব্দুল লতিফ এর বাড়ী, থানা-শিবগঞ্জ, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ বলে জানা যায়।