চালককে হত্যা করে অটো রিক্সা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে মাধবদী থানা পুলিশ। আটক ৪
সুমন পাল, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
অটোরিকশা চালক মো. নুরুল ইসলামের রিক্সা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যা করার রহস্য উদঘাটন করেছে নরসিংদী পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রেপ্তারকৃতরা হলো নরসিংদী জেলার মধাবদী থানার পাথরপাড়া গ্রামের মজিবুর মিয়ার ছেলে বাচ্চু মিয়া (২৭) একই থানার বালুসাইর গ্রামের মুকসেদ আলীর পুত্র সোহেল মিয়া (৩২) একই এলাকার বকুল মিয়ার পুত্র হৃদয় (২৭) ও মৃত ঈমান আলীর পুত্র নবী হোসেন (৩৫)। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম। পুলিশ জানায়, গত ১৬ জুন নরসিংদী মাধবদী থানাধীন দামের ভাওলা এলাকার ৫ নং ব্রিজের নিকট একটি বড়োই গাছের সাথে গামছা দিয়ে বাধা অবস্থায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক মোঃ নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এর আগে গত ১৫ জুন মাধবদী থানার ভাটপাড়ার বাসিন্দা মো: নুরুল ইসলাম তার ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়। ঐদিন রাত সাড়ে আটটায় মো. নুরুল ইসলাম তার ভাইকে মোবাইল ফোনে জানায় তার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজন খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১৬ জুন সকাল আনুমানিক ৬ টায় ওই স্থানে তার মরদেহ খুজে পায়। পরে ১৯ জুন মৃতের স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় হত্যা মামলা রুজু করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের সনাক্তকরণ, ছিনতাইকৃত ব্যাটারি চালিত রিকশা উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। অভিযানের একপর্যায়ে ৯ জুলাই মাধবদী থানার একটি টিম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামি বাচ্চু মিয়া (২৭) কে মাধবদী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্য মতে অভিযান পরিচালনা করে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একই দিনে ঘটনার সাথে জড়িত সহযোগী আসামী হৃদয়, সোহেল এবং নবী হোসেনকে গ্রেফতার করে মাধবদী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আসামীরা জানায় গত ১৫ জুন রাত আটটার দিকে নরসিংদী শহরের সাহেপ্রতাব থেকে বাচ্চু মিয়া, হৃদয় এবং সোহেল মোঃ নুরুল ইসলাম এর ব্যাটারি চালিত রিক্সায় যাত্রী হিসেবে ওঠে। রিকশায় ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসার পর আসামিরা মো. নুরুল ইসলাম কে বড়োই গাছের সাথে পায়ে, পেটে এবং গলায় গামছা দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে হত্যা করে তার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে তারা ৩ জন লুষ্ঠিত ব্যাটারি চালিত রিকশাটি নিয়ে নবী হোসেনের কাছে ১৫০০০ টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে। আসামি নবী হোসেন ব্যাটারি চালিত রিকশাটি ক্রয় করার সাথে সাথেই এর কিছু যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা খুলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে পুলিশ জানায়। পরে পলিশ আসামী নবী হোসেনের বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত ব্যাটারি চালিত রিকশার ২টি ব্যাটারি, একটি চাকা এবং একটি হেডলাইট সংযুক্ত মিটার বক্স উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে বাচ্চু মিয়া, সোহেল, হৃদয় ও নবী হোসেন নিজেদের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।