তাজিমুল ইসলাম সোহেল ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি:
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়া ইউনিয়নে ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়ম ও মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।গত ২৫ ই জানুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে সরকারী বিধি মোতাবেক সৃষ্টপদে ০১ জন আয়া,শূন্যপদে ০১ জন অফিস সহায়ক পদে দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকায় নিয়োগ বিঙ্গপ্তি প্রকাশিত হয় কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম ও উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ আসায় নিয়োগ প্রকাশ হওয়ার পরেও কার্যক্রম স্থগিত হয়।
পরবর্তীতে দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকায় গত ০৮ জুলাই ২০২২ ইং তারিখে পুনঃ নিয়োগ বিঙ্গপ্তি প্রকাশিত হয় শূন্যপদে ০১ জন প্রধান শিক্ষক,০১ জন অফিস সহায়ক,০১ জন আয়া,০১ জন নিরাপত্তা কর্মি, ০১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মি পদে কিন্তু প্রধান শিক্ষক পদটি বাদে বাকি ৪ টি পদে গত ০৪/০৩/২০২৩ ইং তারিখ শনিবার পুনঃনির্ধারিত দিনে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় আয়া পদটিতে আসমা খাতুন,মনিরা খাতুন ও হামিদা খানম নামে এই তিন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন।
এই নিয়োগে আয়া পদে চাকুরী প্রার্থী আসমা খাতুন,অভিযোগ তুলে প্রতিবেদককে বলেন,আমি একজন বৈধ যোগ্য প্রার্থী,আমি বিগত ১৬ টি বছর যাবত এই স্কুলে এই পদে অস্থায়ী খন্ডকালীন নিয়োগের ভিত্তিতে চাকুরী করে আসছি এবং আমাকে নিয়োগের সময় উক্তপদে নিয়োগ দেওয়া মর্মে রেজুলেশন আছে তার প্রমাণ আমার নিকট রয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার আগের দিন সুচতুর প্রভাবশালী ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং
কমিটির সভাপতি আঃ হালিম বিশ্বাস, ঐ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল সহ আমাকে স্কুলের পাশের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন,আমাকে বলেন, তোমার কোন সমস্যা নেই টাকা দিলে তোমার চাকুরী হবে কিন্তু আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায়, আমাকে বলে তুমি টাকা না দিলে,অন্য প্রার্থী বেশি টাকা দিবে তখন আমরা তাকে নিয়োগ দিবো। আমি অসহায় গরীব বলে টাকা না দিতে পারায় আমি যোগ্য হয়েও চাকুরী থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমি এই অনিয়মের বিচার চাই।
এদিকে নিরাপত্তা কর্মি পদে চাকুরী প্রার্থী মোঃ আসাদুজ্জামান ওরফে লিটন তরফদারের আপণ মেজো ভাই প্রভাষক টিএম বিল্লাল বলেন, ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আঃ হালিম বিশ্বাস যখন জানতে পারেন আমার ভাই নিরাপত্তা কর্মি পদে আবেদন করেছেন, তখন তিনি মুঠে ফোনে কল দিয়ে আমার নিকট ৫ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করে, আমি তাকে উৎকোচ দিতে অস্বীকার করায় আমার ভাই যোগ্য হওয়া সত্বেও চাকুরী হয়নি। আমি উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট এই প্রহসনমুলক নিয়োগ বাতিলের দাবি করছি।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে,প্রতিবেদক ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আঃ হালিম বিশ্বাসের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি করোও কাছ থেকে টাকা নিইনী,টাকা চাইনী এবং চাইবোও না এবং নিবোওনা,আমার এখানে টাকা চাওয়ার কোন অপসন নেই। অভিযোগকারী আসমা বেগম ঐ স্কুলে ১৬ বছর চাকুরী করতেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে,তিনি বলেন আমি এই স্কুলে বছর দেড়েক এসেছি, আসমা খাতুন এখানে কাজ করতেন আমার নিজস্ব অর্থায়নে তবে কোন অস্থায়ী নিয়োগের ভিত্তিতে নয়, ভলেন্টিয়ার সার্ভিস হিসাবে কাজ করতেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ কুমার মন্ডলের নিকট মুঠো ফোনে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অভিযোগের বিষয়ে আমি জানি না,ঐ বিষয়ে আমি বলতে পারবো না,পরীক্ষাটি স্বচ্ছ হয়েছে,পরীক্ষায় কোন অস্বচ্ছতা বা কোন অনৈতিক কোন প্রভাব বা অনৈতিক কোন কার্যক্রম সম্পাদিত হয় নাই।
ভূক্তভোগী চাকুরী প্রার্থী ও এলাকাবাসী এই অনিয়ম ও প্রহসনমুলক নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।