দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে সফল সাতক্ষীরার শিক্ষক সামছুজ্জামান
স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সরুলিয়ায় দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সামছুজ্জামান। শিক্ষকতার পাশাপাশি পরীক্ষামূলক ১একর জমিতে ৩’শ ১৩টি দার্জিলিং কমলার চারা রোপন করেন তিনি।
৩ বছরে ফল ধরা শুরু করেছে। নভেম্বর মাস থেকে বাগানে উৎপাদিত কমলা বিক্রয় শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন কমলা বাগানে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হচ্ছে সার্বিক দিক-নির্দেশনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোটা বাগান জুড়ে শোভা পাচ্ছে বড় বড় হলুদ রঙের কমলা। স্বাদে, রঙে ও আকারে অতুলনীয় এ কমলা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রথমবারে প্রতিটা গাছে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে কমলা ধরেছে। যার পাইকারি বাজার দর পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করে।
ভারতীয় জাতের এ ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে। বাগানে উৎপাদিত এসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে চলে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। বাগানে উৎপাদিত এ কমলা কিনতে বাগানেই ছুটে আসছেন ব্যবসায়ীরা।
কমলা বাগানে কাজ করা দিনমজুর বলেন, তিন বছর ধরে আমরা ১০/১৫ জন লোক কাজ করি। এখানে কাজ করে আমাদের সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগান দেয়। প্রথমবার ফলন আশানুরুপ ভাল হয়েছে।
দর্শনার্থী ওলিউর রহমান বলেন, লোকমুখে শুনে বাগানটি দেখতে এসেছি। দেখে চোখ জুড়িয়ে গেছে। আগামীতে পরিবারসহ আসবো। বাগান থেকে ফল খেয়েছ, খুবই সুস্বাধু। পরিবারের জন্য কয়েক কেজি ফল কিনে নিলাম।
কমলা বাগান মালিক শিক্ষক সামছুজ্জামান বলেন, নীলফামারী থেকে তিন’শ টাকা পিচ প্রতি চারা ক্রয় করে পরীক্ষামূলকভাবে ১একর জমিতে চাষ করে ৩ বছরে ফলন পেয়ে অনেক খুশি। আগামীতে আরো প্রায় ২একর জমিতে চাষ করার প্রস্তুতি নিয়েছি।
৩একর জমিতে আমার ৮ল্পক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। যতদিন গাছ বাচবে ততদিন বাগানে জৈবসার, সেচ দেওয়া ও দিনমজুর ছাড়া আর তেমন কোন খরচ নেই। পরবর্তী বছর থেকে পর্যাপ্ত লাভবান হব বলে আশা করছি।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, দার্জিলিং জাতের লেবুটি এ উপজেলার জন্য একটা নতুন ফসল।
ফলটি খেতেও সুস্বাধু। চলতি বছরে দেড় হেক্টর জমিতে এ জাতের কমলা চাষ হয়েছে। আগামীতে এই কমলার চাষ বেড়ে জেলায় নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে বলে আশা করছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সম্প্রসারণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদন বাড়লে বাজারজাত করণে সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষক সামছুজ্জামানের কমলা চাষের সফলতা সাতক্ষীরা জেলার অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তাদের মাঝে সাড়া ফেলবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।