নদী ভাঙনে ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ন এলাকা বিলীন
সঞ্জয় ব্যানার্জী, সত্যকন্ঠ;পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীতে প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ নানা কারনে নদীর ভাঙনে ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ন এলাকা বিলীনের পথে। উপকূলীয় উপজেলা নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ন এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হতে চলছে।
উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। ঘূর্নিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কবলে পরে উপকূলীয় উপজেলার মানুষ একাধিক বার সর্বশান্ত হয়েছে।
জানা যায়, দশমিনা উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দূর্গম চরাঞ্চলে বেড়িবাধ না থাকায় চরবোরহান, চরশাহজালাল, চরহাদী, চর-চরবাঁশবাড়ীয়া, চরঘূর্নি, চর-আজমাইন, লালচর, চর-তৈলক্ষ্য, চর-ফাতেমাসহ চরাঞ্চলে প্রতি বছর ঘূনিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ও সাগরের নোনা
পানি ঢুকে চরে বসবাসকারী কৃষকদের ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বার বার ফসলহানির কারনে হাজার হাজার চরের কৃষক, মহাজন, ব্যাংক ও এনজিও থেকে একাধিকবার ঋন গ্রহন করে পরিশোধ করতে পারছে না। উপজেলায় বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর বুকচিরে জেগে উঠা ছোট বড় ২২-২৫টি চরে শত শত মানুষের জনবসতি রয়েছে।
নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা চরাঞ্চলে বেড়িবাধসহ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি। চরের কৃষকেরা সরকারের কাছে বেড়িবাধ নির্মানের দাবী জানিয়ে বহুবার স্বারকলিপি ও মানব বন্ধন করেছেন।
চর-বোরহান ইউনিয়নের বাবুল সরদার ও মোকলেস মাতুব্বর জানান, এসব চরে জনবসতী গড়ে উঠার ৪০বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মান করা হয়নি। এসব চরের চারদিকেই নদী।
চর-শাহজালালের কৃষক রফিক হোসেন ও
চর-শাহজালালের কৃষক রফিক হোসেন ও
হানিফ বয়াতী এবং বাদশা হাওলাদার জানান, আমাগোরে আল্লায় বাচায়, আমাগো চরে কোন বেড়িবাঁধ না থাকায় বন্যা জলোচ্ছ্বাসে নোনা পানি ঢুকে প্রতি বছর ফসল নষ্ট হয়। আমরা সরকারের কাছে বেড়িবাধ চাই, রিলিফ চাই না।
চরহাদির কৃষক বারেক হাওলাদার, মোঃ আমিন, মতি মাতুব্বর এবং কালু মৃধা জানান, ঝড় জলোচ্ছ্বাসের পর সরকারি ও বেসরকারীভাবে চরের মানুষকে ত্রান দিলেও বন্যার হাত থেকে আমরা কিভাবে বাচতে পারি সে ব্যবস্থা কেউ করে না।
তারা আরো জানান, ঘূর্নিঝড় জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি অবর্ননীয়। বেড়িবাধ ছাড়া আমাদের বাচাঁর কোন উপায় নেই। ত্রান না দিয়ে বেড়িবাধ নির্মান করে দিত।উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর-বাশঁবাড়িয়া চরের মিরাজ খাঁ, আজাহার বেপারী,
কবির হোসেন ও আলমাছ ফকির জানান, তাদের চরে বেড়ীবাধ না থাকায় কয়েক দফা বন্যায় ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চরাঞ্চলের কৃষকের একটাই দাবি ত্রান নয় এবার বেড়িবাধ চাই।
এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, চরহাদীতে বেড়ীবাধ নির্মানের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তিনি আরো বলেণ, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে চরে নোনা পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এতে কৃষতের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, উপজেলা সমন্বয় সভায় চরে বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছি।
এবিষয়ে চরবোরহান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার বলেন, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝড় জলোচ্ছ্বাসে নদী ও সাগরের নোনা পানি ঢুকে কৃষকের ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করে তাই চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মান করা একান্ত প্রয়োজন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জাফর আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ চরাঞ্চলে নদী ও সাগরের নোনা পানি ঢুকে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাফিসা নাজ নীরা বলেন,
পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চরাঞ্চলে বেড়িবাধ নির্মান করা হবে। আর নদীর ভাঙ্গন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন হবে।
এবিষয়ে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সংসদ সদস্য ও নৌ পরিবহন
এবিষয়ে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সংসদ সদস্য ও নৌ পরিবহন
মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এসএম শাহজাদা সাজু এমপি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে ডিও লেটার পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নদীর ভাঙ্গন রোধসহ বেড়িবাঁধের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।