মোহাম্মদ এরশাদ বাঁশখালী প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে বোট ডাকাতির ঘটনায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৪ জলদস্যু ডাকাতি মামলা ও অস্ত্রসহ র্যাবে আটক
১৭ ফেব্রুয়ারী বঙ্গোপসাগরে বড়গুনা জেলার বোট ডাকাতির ঘটনার জড়িত সন্দেহে ৪ জলদস্যু সদস্যকে আটক করা হয়,আগ্নেয়াস্ত্র, জাল ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বোট জব্দ করেছে র্যাব।
গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা ৪ নং ওয়ার্ডের আলী চাঁন মিয়ার পুত্র মোঃ সেলিম প্রঃ
জলদস্যু সেলিম এর আটকের খবরে বোট মালিকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি।
র্যাব সুত্রে জানা যায়,১৭ ফেব্রুয়ারী বঙ্গোপসাগরে বরগুনা জেলার একটি বোট ডাকাতির ঘটনা ঘটে, ডাকাতরা সংঘবদ্ধ হয়ে একটি দ্রুতগামী ট্রলার নিয়ে বরগুনা জেলার ওই বোটে ধাক্কা দেয় এবং ডাকাতরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে অন্তত ১৮ জন
জেলেকে গুরুতর আহত করেছে, এসময় ডাকাতদের আক্রমণ থেকে প্রাণে বাঁচতে বোট থেকে বেশ কয়েকজন জেলে সাগরে ঝাঁপ দিলে ৯ জন জেলে নিখোঁজ হয়ে যায়,বিষয় নিয়ে র্যাব-৭
চট্টগ্রামসহ র্যাব সদস্যরা যৌথ ভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে নিখোঁজদের মধ্যে ৪ জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও এখনো পর্যন্ত ৫ জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা যায়,উদ্ধার হওয়া ৪ জেলের মধ্যে ১ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলেও জানান র্যাব।
একই সাথে ডাকাতদের আটক ও ডাকাতি মালামাল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে র্যাবের যৌথ আভিযানিক টিম,তারই ধারাবাহিকতায় বাঁশখালী থেকে ৪ জলদস্যুকে আটক করেছে র্যাবের আভিযানিক টিম।আটক আসামীরা হলেন, বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম
বড়ঘোনার ৪ নং ওয়ার্ড এলাকার চাঁন মিয়ার পুত্র মোঃ সেলিম (৪০),তার ছেলে মোঃ ইকবাল (১৫), আহমদ মিয়ার পুত্র মোঃ কায়ছার ওরফে কালু(২৫),একই এলাকার আহমদ মিয়ার পুত্র মোঃ জাহিদ(২৫)।
আটককৃতদের কাছ থেকে ৪টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র,২টি হাতুড়ি,১ কিরিচ,৩টি দা,২ শাবল ও লুটে নেওয়া জালসহ উদ্ধার করা হয়।ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বোটটিও জব্দ করা হয়েছে,এছাড়াও জেলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া একটি মোবাইলও ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও র্যাব সুত্রে জানা গেছে।
র্যাব আরো বলেন,
বঙ্গোপসাগরে গত ১০ ফেব্রুয়ারী কুতুবদিয়া চ্যানেলে বাহিরে একটি বোট ডাকাতি করেছে, সেখানে তারা লাভবান না হওয়ার কারণে ডাকাতি বোট নিয়ে ডাকাতরা বরগুনা জেলার দিকে গিয়ে এই ডাকাতির ঘটনা করেছে বলে আটক ডাকাতরা স্বীকার করেছে,ডাকাতরা বাঁশখালী,
কুতুবদিয়া,মগনামা,পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতি করে থাকে,এছাড়াও তারা একে অপরের সাথে তেমন পরিচয় না থাকলেও তাদের একজন গডফাদার রয়েছে, যিনি সবাইকে চিনেন।
ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বোটটির মালিক আটক মোঃ সেলিম,তার এই বোটটি বঙ্গোপসাগরে প্রায় সময় ডাকাতি কাজের জন্যে ডাকাতরা ব্যবহার করে থাকে বলেও জানতে পেরেছে বলে জানান র্যাব।
আটক আসামী সেলিম এর বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা রয়েছে এবং মোঃ কায়ছারের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে বলেও জানান র্যাব,এছাড়াও গত ২৭ জানুয়ারি বঙ্গোপসাগরের গণ্ডামারা খাটখালী থেকে প্রায় ৮/১০ কিঃ মিঃ দূরত্বে আরো একটি
বোট ডাকাতি করেছিল ওই সংঘবদ্ধ জলদস্যুরা।এসময় বাঁশখালী উপজেলার ৭ নং সরল ইউনিয়ন মোঃ তৈয়ব উল্লাহ কোম্পানির মালিকানাধীন “আল্লাহর দান”নামক ফিশিং বোট থেকে মেশিন,জাল ও মাছসহ অন্তত ১৫ লক্ষাধিক
টাকার মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতরা।এই ব্যাপারে বোট মালিক তৈয়ব উল্লাহ বাদী হয়ে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন, যাহা বাঁশখালী কোর্ট বাঁশখালী থানা পুলিশকে তদন্তের জন্যে প্রেরণ করেন,ওই মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ওইদিন তৈয়ব উল্লাহ কোম্পানির বোট
বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে খাটখালীর উদ্দেশ্যে আসার পথে গণ্ডামারা বেড়িবাঁধ থেকে ৮/১০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে আসলেই আল্লাহর দান নামক বোটটি ডাকাতদের কবলে পড়ে।এসময় ডাকাতরা বোটের বেশ কয়েকজন জেলেকে গুরুতর আহত করেছে এবং বোটের মেশিন, মাছ ও জালসহ নিয়ে যায় ডাকাতরা।
এই বিষয়ে আলী চাঁন মিয়ার পুত্র আটক মোঃ সেলিম(৪০),সরল ইউপির ২ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আলীর মোহাম্মদ কায়ছার (৩৫) সহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ গত ১২ ফেব্রুয়ারী বাঁশখালী কোর্টে মামলা দায়ের করেন বোট মালিক তৈয়ব উল্লাহ।
এখন জলদস্যু সেলিম র্যাবের হাতে আটকের খবর পেয়ে বোট মালিক তৈয়ব উল্লাহ কোম্পানি বলেন, সেইদিন আমার বোটটি ডাকাতি করেছে তারা, অভিযুক্ত সেলিম তার বোটটি বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি করার জন্যে ব্যবহার করে থাকে।
সেলিম ও তার বাহিনীদের ভয়ে বোটের মাঝি-মল্লারা মাছ সাগরে মাছ ধরতে যেতে ভয় পাচ্ছে।বোট নিয়ে বের হয়ে খাটখালী মোহনা পারহতে না হতেই তার এই বোট নিয়ে ডাকাতরা চলে আসে,সেই এলাকায় আলী চাঁইন্দার পোয়া সেলিম ওরফে ডাকাত সেলিম হিসেবে বেশ পরিচিত, আটক জলদস্যু সেলিমের নেতৃত্ব সাগরে ডাকাতরা বেপরোয়া ডাকাতি করে যাচ্ছে বলেও তৈয়ব উল্লাহ।