স্টাফ রিপোর্টার, সৈকত মন্ডল:
এবার বাগেরহাটে পানি ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতির খামখেয়ালীপনায় প্রায় দুইশত বিঘা জমির ধান নষ্ট হওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে কৃষকরা। বাগেরহাট সদর উপজেলার হাড়িখালী ডবর খালী ক্ষুদ্র পানি ব্যবস্থাপনা সমবয় সমিতির নামে পানি
ব্যাবস্থাপনা কমিটি তিনটি গেট পরিচালনা করে আসছে। এই সমবয় সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী গত শনিবার গভির রাতে হাড়ি খালী সুইজ গেট দিয়ে নদীর লবন পানি প্রবেশ করায়। ফলে প্রায় দুই হাজার
বিঘার পুটিমারী বিলের মধ্যে দুইশ বিঘার ধান লবন পানিতে প্লাবিত হয়। এই বিলের মধ্যে চাটির অধিক ছোটবড় খাল রয়েছে। এই বিলের পাশথেকে বয়েযাওয়া দড়াটানা নদী। দড়াটানা নদীর পানি লবনাক্ত হওয়ায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করালে সব জমি
লবন পানি তে প্লাবিত। পুটিমারী বিলের খাল আটকে বাঁধ দিয়ে মিস্টি পানির সংরক্ষন করে ধান চাষ করে কৃষকরা। প্রভাবশালী সমবয় সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী লবন পানি প্রবেশ করার কারনে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রবিবার এবিষয়ে ভুক্তভুগী
কৃষকরা উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন এর কাছে গেছে তিনি সোমবার বিকেল সাড়েতিনটায় ঘটনা ন্থল পরিদর্শনের সময় দেন। সেখানে সোমবার বিকালে হাজির হন উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার
রুবাইয়াতাসনিম, ভাইচ চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল ইসলাম,মহিলা ভাইচ চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভিন, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষিকর্মকর্তা তন্ময় দত্ত, বাগেরহাট পৌরসভার ১ নং কাউন্সিলর শামিম হাসান,
সংরক্ষিত কাউন্সিলর আসমা আক্তার, কাড়াপাড়া নিউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মহিতুর রহমান পল্টন, কাড়া পাড়া ইউপি সদস্য মুকৃল সহ শতাধিক কৃষক।
কৃষকরা জানান, উপজেলা থেকে ধানের বিজ সংগ্রহ করে বিজতলায় চারা বানিয়ে ধান চাষ শুরু করি এতে আমাদের বিঘা প্রতি প্রয় ৪০ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে।
ইতোমধ্যেই ধানের মোচা আসা শুরু করেছে এই সময় পানিব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী রাতের আধারে সুইজ গেট দিয়ে লবন পানি প্রবেশ করার ফলে জমির ধান লবনে পুড়ে পচে যাচ্ছে।
তার বলেন চিংড়ি চাষের জন্য নদীর পানি উঠানোর কারনে লবন পানিতে পচে যাচ্ছে কষ্টের ফসল। এর ফলে দুই শতাধিক কৃষকের ৫০ লক্ষ টাকার উপরে ক্ষতি হবে। তবে ২০-২৫ দিন পরে পানি প্রবেশ করালে ধানের ক্ষতি হতনা বলে দাবি কৃষকদের।
লবন পানিতে কৃষকের ধান পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। দুই তিনদিনের মধ্যে এসব ধানের গোড়া পচে নষ্ট হয়ে যাবে দাবি কৃষকদের।পুটিমারী বিলের কৃষক মিরাজ বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে
বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়ায় আমরা আগ্রহ নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু হট্যাৎ করে সুইজ গেট থেকে লবন পানি প্রবেশ করার ফলে আমাদের ধান পচতে শুরু করেছে।
একই মাঠের মোঃ আকরাম হোসেন জানান, তিন বিঘা জমিতে অনেক কষ্ঠ করে উপজেলা থেকে ইউপি সদস্যের সহযোগীতায় ধানের বীজ এনে ধান চাষ করি। মোহাম্মদ আলীর খামখেয়ালির কারনে আমরা আজ পথে বসার উপক্রম হয়েগেছে।
কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মহিতুর রহমান পল্টন বলেন, ক্ষুদ্র পানিসম্পদ সেক্টরে হাড়িখালী সুইজ গেট থেকে ক্ষুদ্র পানি সম্পদ একটি কমিটি আছে তারা অসাধু উপায়ে লবন পানি প্রবেশ করায় দুই থেকে তিনশ বিঘা জমির ধান বিনষ্ট
করেছে । যারা এই কাজটি করেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী করি। এবং কৃষকের ক্ষতি পুরনের লক্ষে আমরা উপজেলা প্রশাসন কে নিয়ে কাজ করছি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা তন্ময় দত্ত বলেন, আমরা সকাল
থেকে বিভিন্ন স্পট গুলি পর্যবেক্ষন করে দেখলাম যে, হাড়ীখারী সুইজ গেট থেকে পানিটা তুলছে এর আশেপাশে যে, জমিগুলিআছে সেগুলি প্লাবিত হয়েছে।
এখন ই আমরা কৃষক তালিকা করে কার কতটুকু ক্ষতি হয়েছে সেই তালিকা করছি। তিনি বলেন আমরা দেড় থেকে দুইশ বিঘা জমির ক্ষতির আশংকা করছি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি তারা পুরো এলাকা সরেজমিনে দেখবে এবং ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে আমাদেরকে জানাবে এবং এই গেট থেকে আর যাতে লবন
পানি ঢুকাতে নাপারে তার ব্যবস্থা গ্রহন করবো।এবিষয়ে পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর মোবা্ইল ফোনে বার বার ফোন দিলে মোবা্ইলের সু্ইচ বন্ধ পাওয়া গেছে।