বগুড়া প্রতিনিধি ঃ
সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে গুঞ্জন ও কানাঘুষা চলছে। কারণ একদিকে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি অপরদিকে বিবাহিত ও চাকুরীজীবিতে ভরপুর হওয়ায়ই কানাঘুষার মূল কারণ। গত ৪ বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ বিভিন্ন
ইউনিটের কমিটির। মেয়াদ উত্তীর্ণ এ কমিটিতে এখন চাকুরীজীবী এবং বিবাহিত নেতাদের ছড়াছড়ি। দলকে শক্তিশালী করতে অতি দ্রুত নতুন কমিটি চান নবীন নেতাকর্মীরা। পূর্বের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে মোফাজ্জল হোসেন মায়াকে আহ্বায়ক করে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক
কমিটি গঠন করা হয় গত ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। পরে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সোহান সাগর সভাপতি এবং দেলোয়ার হোসেন দুলাল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাশ করা হয় পরবর্তী
বছর ২০১৯ সালের ১১ জুনে। সে অনুযায়ী উপজেলা ছাত্রলীগের এই বার্ষিক কমিটির মেয়াদ গত ২০২০ সালের ১১ জুন উত্তীর্ণ হয়েছে। উপজেলার পৌর, ইউনিয়ন, সাংগঠনিক ইউনিয়ন, কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ সর্বমোট ২২ টি ইউনিটের কমিটি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ গঠিত। এসব
ইউনিটের কমিটিগুলো গত ২০১৮ সালে গঠন করা হয়েছে। ফলে ৪ বছরের এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিতে এখন চাকুরীজীবি এবং বিবাহিতদের ছড়াছড়ি। যারা এখন দলে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিস্ক্রিয় রয়েছেন।উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তরের সভাপতি তারেক রহমান
এখন ঢাকায় চাকুরী করেন, দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদকও ঢাকায় চাকুরী করেন এবং সভাপতি শান্ত মিয়াও বিবাহিত। হাটশেরপুর ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদুল ইসলাম চাকুরীর কারণে বেশি সময়ই থাকেন এলাকার বাহিরে, সাধারণ-সম্পাদক মোঃ সজিব আহম্মেদ এলাকার একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের সাধারণ-সম্পাদক লিটন মিয়াকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মোঃ মামুন মিয়াকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ- সম্পাদক হলে এখন তিনিও থাকেন এলাকার বাহিরে। মানিকদাইড় সাংগঠনিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল খালেক বিবাহিত এবং কর্মের তাগিদে এখন জামালপুর জেলায়
থাকেন, সাধারণ- সম্পাদক শাকিবুল হাসান সন্তেষ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এখন বেশির ভাগ সময়ই থাকেন অসুস্থ। কাজলা ইউনিয়নের সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ বিয়ে করে এখন কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত। সাধারণ সম্পাদক ইমান আলীও বিয়ে করে এখন এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন। কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হাসান মোন্নাফ এলাকায় থাকলেও তিনি
বিবাহিত। বোহাইল ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম বিয়ে করে এখন চাকুরীর কারণে পাশবতী জেলা জামালপুরে, সাধারণ-সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসাইন বিয়ে করে এখন ঢাকায় কর্মরত। বোহাইল ইউনিয়নের সাংগঠনিক ইউনিয়ন আওলাকান্দির সভাপতি জুয়েল রানা বিয়ে করে ঢাকায় চাকুরী করেন, সাধারণ
সম্পাদক শাকিল আহম্মেদও বিয়ে করে কর্মের তাগিদে থাকেন এলাকার বাহিরে। ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন ঢাকায় চাকুরী করেন, জোড়গাছা সাংগঠনিক ইউনিয়নের সভাপতি জামিল আহম্মেদ বিয়ে করে কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত। সাধারণ-সম্পাদককে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক করা
হয় মোঃ রিগ্যান মিয়াকে। সেও বিয়ে করে ব্যস্ত থাকেন কর্মজীবন নিয়ে। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সাধারণ-সম্পাদক মুহিতুল ইসলাম মিম ঢাকায় তিতুমীর কলেজে লেখাপড়ার কারণে ঢাকায় থাকেন। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সাংগঠনিক ইউনিয়ন রামচন্দ্রপুরের সভাপতি শোয়েব আক্তার
ছনি বিয়ে করে বগুড়ায় থাকেন, সাধারণ সম্পাদক রতন মিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। নারচী ইউনিয়নের সভাপতি আল আমিন ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয় শরিফুল ইসলাম শারিককে। সেও কর্মের কারণে এখন ঢাকায় থাকেন। সাধারণ
সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ বিয়ে করে ঢাকায় চাকুরী করেন। পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত ইসলাম বিশুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকও বিয়ে করে এখন ঢাকায় চাকুরী করছেন। কুতুবপুর ইউনিয়নের সভাপতি আসিফ আহম্মেদ ঢাকায়
চাকুরী করেন, সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ দলে নিস্ক্রিয় রয়েছেন, দেবডাঙ্গা সাংগঠনিক ইউনিয়নের সভাপতি বায়েজিদ মিঠু বিয়ে করে এখন কর্মজীবন শুরু করেছেন। সাধারণ-সম্পাদক জুয়েল রানাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হোন মোঃ সাব্বির
মিয়া। সেও এখন দলে নিস্ক্রিয়। সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজের আহ্বায়ক আশিকুর রহমান বিবাহিত ও যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং পরবর্তীতে কলেজ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। চন্দনবাইশা ডিগ্রি কলেজের সভাপতি লতিফুর বারী লিমন বিবাহিত এবং কর্মের কারণে দীর্ঘদিন দলে নিষ্ক্রিয়। এদিকে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহান সাগরও বিবাহিত। তিনি এখন কন্যা সন্তানের জনক। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, প্রয়াত সাংসদ মরহুম জননেতা আবদুল মান্নান এমপির প্রচেষ্টায় উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে
উপজেলা ছাত্রলীগ গঠন করা হয়। সম্মেলন পর থেকেই নতুন পুরাতনদের সমন্বয় করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে আসছি। কিন্তু করোনা মহামারীকালিন সময়ে বিভিন্ন ইউনিটের অনেক নেতাকর্মীরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং কর্মজীবনে প্রবেশের ফলে অনেকেই এখন
এলাকায় থাকেন না। যারা এলাকায় থাকেন তাদেরকে নিয়েই ছাত্রলীগের কার্যক্রম গতিশীল রাখতে আমি আমার দ্বায়িত্ব শতভাগ পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে নতুন করে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করতে আমরা উপজেলা ছাত্রলীগ সবসময় প্রস্তুত আছি। কথা হয় উপজেলা
ছাত্রলীগের সভাপতি সোহান সাগরের সাথে। তিনি বলেন, করোনা মহামারী ও বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনের কারণে এতদিন আমরা উপজেলায় কোন কমিটি গঠন করতে পারিনি। আমি আর ছাত্রলীগ করতে চাইনা। তবে আমরা চাই অতি