একদিন বিরতি দিয়ে ফের মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা মহাসড়ক অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত শিল্প কারখানা মাহমুদ জিন্স এর কয়েক হাজার শ্রমিক ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় অবস্থান নেয়।
উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা গামী এবং ঢাকা ও গাজীপুর হতে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার প্রধান রুটের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।এতে উভয় পাশে শত শত যানবাহনের লম্বা লাইন লক্ষ্য করা গেছে।উভয় পাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের মত জ্যাম জটের সৃষ্টি হয়।এতে করে ঢাকা হতে উত্তরবঙ্গের এ মহাসড়ক টি কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
গতকাল সকালে আন্দোলন রত পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,তারা বলেন ,মাহমুদ জিন্স পোশাক কারখানার মালিক আমিনুল ইসলাম মুজিবর ও রাফি মাহমুদ গত ছয় মাসে তিন বার বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও মালিকপক্ষ বেতন প্রদান করেননি।
চলতি মাসের ১০ তারিখেও বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও পরিশোধ না করে তালবাহানা করছেন এবং চলতি মাসে এ নিয়ে তিনবার আন্দোলন করলেন।গত ২১ আগস্ট আবারো শ্রমিকগণ আন্দোলনে নামেন তখন সেনাবাহিনী এসে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার বকেয়া বেতন পরিশোধ করবেন বলে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন।
মাহমুদ জিন্সে কর্মরত প্রকৌশলী সুমন জানান,মালিকপক্ষ বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বেতনাদি পরিশোধ না করায় শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বকেয়া বেতনের দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ। আমরা কোনরকম ভাঙচুর ও জ্বালাও পোড়াও এ বিশ্বাস করি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কারখানার শ্রমিক জানান, মালিকপক্ষ যখন তখন যাকে তাকে কারখানা থেকে ছাঁটাই করেন।শ্রমিকরা আরো বলেন,গত ২২ আগস্ট রাতে নাইট শিফটে কর্মরত সকল শ্রমিকদের রাত দশটার দিকে ছুটি দিয়ে গোপনে মালিকপক্ষ কারখানার ভিতরের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করেন, শ্রমিকগণ টের পেয়ে মালামাল সরিয়ে নিতে বাধা দেন।
গতকাল শুক্রবার আন্দোলন চলাকালীন অবস্থায় দুপুর বারোটার দিকে খবর আসে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে,এ সংবাদ শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকগণ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা শিল্প পুলিশের কাউকে দেখা যায়নি।