কক্সবাজারের উখিয়ায় দুর্ধর্ষ ডাকাত রাসেল ও তার ৬ সহযোগী গ্রেফতার
আমিনুল্লাহ কক্সবাজার:
আমিন উল্লাহ কক্সবাজারের কক্সবাজার উখিয়া থানাধীন তেলখোলা বটতলী গহীন পাহাড়ী এলাকা থেকে দুর্ধর্ষ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর প্রধান শেখ রাসেল ওরফে ডাকাত রাসেল ও ছয় সহযোগীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫; বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার
সম্প্রতি কক্সবাজার শহর’সহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় প্রায় প্রতিনিয়তই ডাকাতি, অপহরণ, মাদক পাচার, ছিনতাই ও ধর্ষণের মত অপরাধ সমূহ সংঘঠিত হচ্ছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। আপনারা জানেন, র্যাব-১৫ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অপরাধের সাথে জড়িত চক্রগুলোকে গ্রেফতারসহ জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ আগস্ট ২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ২০.৩০ ঘটিকায় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা বটতলী গহীন পাহাড়ী এলাকায় দুর্র্ধর্ষ অস্ত্রধারী একটি ডাকাত দলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে।
র্যাবের আভিযানিক দলকে দেখে পাহাড়ী এলাকার আস্তানা হতে পলায়নকালে ধাওয়া করে দুর্ধর্ষ ডাকাত রাসেল বাহিনীর প্রধান শেখ রাসেল ওরফে ডাকাত রাসেল ও ছয় সহযোগীসহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে অভিযানস্থল হতে ০৬টি দেশীয় তৈরী একনলা বড় বন্দুক, ০২টি এলজি, ১২ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ০৭ রাউন্ড রাইফেলের তাজা কার্তুজ ও ০১ রাউন্ড খালি কার্তুজ, ০১টি রামদা, ২০,০০০ (বিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ০৪টি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার* করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রটির বিস্তারিত পরিচয় :শেখ রাসেল ওরফে ডাকাত রাসেল (৩২), পিতা-মৃত শেখ হাবিবুর রহমান, সাং-থাইংখালী, উখিয়া, কক্সবাজার।মোঃ ছলিম (৩৮), পিতা-দুদু মিয়া, সাং-রঙ্গীখালী, টেকনাফ, কক্সবাজার।
নুরুল আমিন (৪২), পিতা-কবির আহাম্মদ, সাং-রঙ্গীখালী, টেকনাফ, কক্সবাজার।কায়সার উদ্দিন (২০, পিতা-নুরুল আমিন, সাং-রঙ্গীখালী, টেকনাফ, কক্সবাজার।মোঃ সাদেক হোসেন (৩০), পিতা-মৃত দিল মোহাম্মদ, সাং-রঙ্গীখালী লামারপাড়া, টেকনাফ, কক্সবাজার।সাহাব উদ্দিন (২৫), পিতা-নুরুল ইসলাম, সাং-কাঞ্জরপাড়া, টেকনাফ, কক্সবাজার।
নুরুল হাকিম (৪০) পিতা-আব্দুর শরিফ, সাং-থাইংখালী ঘোনারপাড়া, উখিয়া, কক্সবাজার।গ্রেফতারকৃত চক্রটিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাত দলটি উখিয়ার তেলখোলা বটতলী ও টেকনাফের রঙ্গীখালী গহীন পাহাড়ী এলাকায় আস্তানা গড়ে তুলে এবং সেখান থেকে মূলহোতা ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে খুন, অপহরণ, ডাকাতি ও দুস্যতা,
চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে উখিয়ার থাইংখালী বনের বিভিন্ন স্পটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে বহু মামলার আসামী চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ডাকাত রাসেল।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শেখ রাসেল ওরফে ডাকাত রাসেল (৩২) একজন তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এবং ডাকাত রাসেল নামে খ্যাত। গ্রেফতারকৃত ডাকাত রাসেলের সাথে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ছত্র-ছায়ায় সে উল্লেখিত অপরাধসমূহ করে থাকে।
ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে রাসেল বাহিনী নানাবিধ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘঠিত করত। এমন কি একাধিকবার বিজিবি, পুলিশ এবং ফরেস্টের ফোর্সদের উপর সশস্ত্র হামলা করেছে। সম্প্রতি প্রকাশ্যে না এসে অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, খুনসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নারীদের অপহরণসহ ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ ডাকাত রাসেল বিরুদ্ধে রয়েছে। ডাকাতি, অপহরণ, মাদক,
মারামারি, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১৫টির অধিক মামলা রয়েছে এবং সে একাধিক মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী বলে জানা যায়। উল্লেখ্য যে, গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ ইউএনও, উখিয়ার নেতৃত্বে অভিযানে তার কয়েকটি আস্তানার একটি আস্তানা হইতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেন।
গ্রেফতারকৃত মোঃ ছলিমের বিরুদ্ধে ০৩টি, নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ০৫টি, সাদেক হোসেনের বিরুদ্ধে ০৬টি, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে ০৩টি এবং নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে ০৩টির অধিক রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রটির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।