কুরবানিকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে রংপুরের কামারা
মাটি মামুন, রংপুর:
আগামী ২৯ জুন বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কুরবানির ঈদ।
ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন একালার কামাররা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। এই ঈদে গরু, ছাগল, উটকে কুরবানি পশু হিসেবে জবাই করা হয়।সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কুরবানির পশু জবাই চলে। এসব পশুর গোশত কাটতে দা-বটি, ছুরি-ছোরা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য।
যেহেতু কুরবানির পশু কাটাকুটিতে চাই ধারালো দাঁ, বটি, চাপাতি ও ছুরি। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে রংপুরের কামার শালাগুলো।কয়েকজন কামারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে রংপুরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়,আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন তাদের দোকানে। আগে যে সব দোকানে দুজন করে শ্রমিক কাজ করতো, এখন সে সব দোকানে ৫-৬ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন।
কামার দোকানদারদের অভিযোগ কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও শ্রমিকের দাম বেড়ে গেছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ঈদ উপলক্ষে দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রংপুর শহরের সিটি বাজরের কামার সত্য রঞ্জন দাশ বলেন, সারা বছর কাজ কম থাকে। কুরবানির ঈদ এলে আমাদের কাজ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে অপর কামার প্রভাস চন্দ্র দাশ বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে আমাদের বেচা কেনা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবে ঈদের দুই দিন আগে থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বেচাকেনা হবে। তখন আমাদের খাওয়ার সময়ও থাকে না।রংপুর নগরীর মেডিকেল পুর্বগেট এলাকার কামার বাবু বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লা ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে গিয়েছে। দুই মাস আগেও প্রতি বস্তা কয়লার দাম ছিলো ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সেই কয়লা এখন আমাদের ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই আমরা চাপাতি, ছুরি ও দায়ের দাম একটু বেশি নিচ্ছি। তা না হলে আমাদের লাভ হবে না।এদিকে দা, বটি, চাকু, চাপাতি তৈরি ও পুরনগুলোতে শান দিতে ব্যস্ত রংপুরের কামার শিল্পরা।