ওবায়দুর রহমান, ভাঙ্গা -ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং তাণ্ডবে প্রায় ৭ বিঘা জমির কলার বাগান নষ্ট হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে এক কৃষক।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের কররা গ্রামের বর্গা চাষী মো. সিদ্দিক মাতুব্বর এই বছর অন্যের জমি পচানী কিনে ৭ বিঘা জমির উপর কলার বাগান করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তাণ্ডবে কলার বাগান নষ্ট হয়ে যায়। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে ঐ কৃষক।
এই বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. সিদ্দিক মাতুব্বর বলেন, আমি এবছর জমি পচানি কিনে করার বাগান করি। এহন পর্যন্ত আমি ১০ লাখ টাকা খরচ করছি এই বাগানের পিছনে। কলা গাছে কলা ধরতেও শুরু করছে কিন্তু এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কারনে আমার সব কলা গাছ ভেঙ্গে মাটিতে পরে গেছে। এহন তো আমার সব শেষ হয়ে গেলো।
এই বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, আমরা তো শুধু মাত্র উৎপাদণের সঙ্গে জড়িত এই বিষয় টি দেখবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস। তবে এই ঘটনা আমি জানতাম না আপনাদের মাধ্যমে জানলাম আমি আজই পরিদর্শনে যাবো।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ মাতুব্বর বলেন, আমার বড় ভাই কোন ছেলে নেই ৭ টি মেয়ে। অনেক কষ্ট করে এই কালার বাগান টি করেছেন কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণ বাগান ভেঙ্গে গেছে। এখন ওনার সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া বাঁচার কোন উপায় নেই ।
স্থানীয় এক বর্গা চাষী মোতালেব চৌধুরী বলেন, আমরা পাশা পাশি জমিতে চাষ করি। ওর জমি নেই তাই মানুষের কাছ থেকে জমি নিয়ে বাগান করছে। বাগানে ফল কেবল আশা করছে এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। ওর কোন ছেলে নেই তাই ইনকাম শুধু এই বাগান এখন যে ওর কি হবে এটা ভেবেই কষ্ট হয়।
এই বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. ইরশাদ মাতুব্বর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হানিফ মাতুব্বরের ভাই সিদ্দিক মাতুব্বরের কলার বাগান এই ঘূর্ণিঝড়ের কারনে নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, ক্ষতিগ্রস্ত ঐ কৃষক ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের করার গ্রামের মৃত মো. জয়নুউদ্দিন মাতব্বরের ছেলে সিদ্দিক মাতুব্বর। ৭ মেয়ের পিতা সিদ্দিকের আয় রোজগার তার শুধু এই কলার বাগান। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৭ বিঘা জমি পচানি নিয়ে বাগান তৈরি করে।
এলকাবসীর দাবি যদি সরকার এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন কলার বাগান টি আগের মতো সাজাতে সহযোগিতা করতেন তাহলে খুব ভালো হতো।
এই বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ের কারনে আমারা তখন জানলে ভালো হতো। এখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যদি আমাদের নিকট আবেদন করে তাহলে আমরা তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।