তাজিমুল ইসলাম সোহেল, খুলনা:
খুলনা ডুমুরিয়ায় সাংবাদিক পেটানোর ঘটনার বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের জেলা নেতৃবৃন্দদেরকে সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ,
একথা জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি কামরুজ্জামান জুয়েল তিনি বলেন আমাদের চারজন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি এসপি মহোদয়ের সাথে দেখা করে সাংবাদিক প্রহারের বিষয়টি জানান, তখন তিনি
আমাদেরকে এ আশ্বাস প্রদান করেন। প্রসঙ্গত গত ২০শে এপ্রিল খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজারের মোল্ল্যা হোটেলের মালিক মাহবুবুর রহমান মোল্ল্যার(৩৩) বিরুদ্ধে প্রকাশ্য
দিবালোকে দৈনিক জাতীয় সবুজ বিপ্লব পত্রিকা ও বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক, সাংবাদিক মোঃ জিয়াউর রহমান(৩৬),
পিতা মোঃ আব্দুর রহিম সরদার, গ্রাম ঘোষড়া, থানা ডুমুরিয়া, জেলা খুলনাকে সন্ত্রাসী কায়দায় পেটানোর অভিযোগ ওঠে এই বিষয়ে জিয়াউর রহমান ডুমুরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে
জানা যায় গত ২৪শে জুন চুকনগর বধ্যভূমিতে আইজিপি মহোদয়ের প্রোগ্রাম শেষে চুকনগর বাজারের মোল্ল্যা হোটেলে খেতে যান সাংবাদিক জিয়াউর রহমান, খাওয়ার সময় তিনি খাবার প্লেটে অখাদ্য মুরগির নখ দেখতে পান।
তখন তিনি বিবাদীকে বলেন তার খাবারের প্লেটটি পাল্টে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিবাদি প্লেটটি পাল্টে না দিয়ে তার সাথে দুর্ব্যবহার করে। এবং ঐ খাবার তাকে জোর পূর্বক খাওয়ানোর চেষ্টা করে। তিনি খাবার রেখে সম্মানের সাথে হোটেল থেকে চলে আসেন।
অতঃপর ফেসবুকে তিনি এবিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি/আমরা পত্রিকায় কোন নিউজও করি নাই। যার প্রেক্ষিতে মোল্ল্যা হোটেলের মালিক মোঃ মাহাবুর মোল্যা (৩৩), পিতা আজিজ মোল্যা, গ্রাম চুকনগর থানা ডুমুরিয়া, জেলা খুলনা তাকে গত ২০শে এপ্রিল রাত্র অনুমানিক ৭টার দিকে
বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ডুমুরিয়া উপজেলা শাখা, চুকনগর অফিসে বসে থাকা অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে উক্ত ক্লাবের মধ্যে এসে তাকে দেখা মাত্রই অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন তিনি বিবাদীর গালিগালাজের কারন জানতে চাইলে বিবাদী তার উপর ক্ষিপ্ত
হয়ে তার বাম কান সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ীভাবে চড়, কিল, ঘুষি মেরে আহত করে। যার ডিডিও চিত্র ভুক্তভোগী সহ সাংবাদিকদের নিকট সংরক্ষিত আছে, তিনি থানায় অভিযোগ করে বাড়িতে আসার পর প্রেস
ক্লাবের অন্য সদস্যরা মারধরের ধারণকৃত ভিডিও মোবাইলে প্রচারসহ লাইক ও কমেন্ট করার জন্য বিবাদিরা মোবাইলে হুমকিসহ চুকনগর থেকে যাওয়ার সময় ভুক্তভোগী সাংবাদিককে গতিরোধ করে পুনরায় মারার জন্য। এই বিষয়ে সাংবাদিক জিয়াউর রহমানসহ প্রেস ক্লাবের অন্য সদস্যরাও আতঙ্কের ভিতর সময় পার করছেন।
এই বিষয়ে মাহাবুর রহমান মোল্ল্যার কাছে জানলে তিনি বলেন আমার হোটেলের সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন বিষয় নিয়ে তিনি স্ট্যাটাস প্রদান করেছেন ফেসবুকে, এই বিষয়ে আমি জিয়াউর রহমানের কাছে ঐদিন রাতে জানতে গেলে উভয়পক্ষের মারধরের ঘটনা ঘটে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, মোল্ল্যা হোটেলের মালিক মাহবুবুর রহমান মোল্ল্যা চুকনগরের আলোচিত সন্ত্রাসী বাহিনী ফরহাদ হোসেন বাবু ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় হোটেল ব্যবসার আড়ালে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ও পতিতা ব্যবসা সহ বিভিন্ন
ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকলেও ডুমুরিয়া থানার পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। সে সবার কাছে ডুমুরিয়া থানার পুলিশের সোর্স বলেও বিভিন্ন সময় পরিচয় দিয়ে আসছে, যাহার কারণে স্থানীয় লোকজন তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায়।
কিছুদিন আগেও এই মোল্ল্যা হোটেলে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সত্যতা পেলে হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন ও জরিমানা আদায় করেছেন।
এই বিষয়ে খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ জানান বাংলাদেশ প্রেসক্লাব খুলনা জেলা নেতৃবৃন্দদেরকে সঠিক তদন্তের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় জানিয়েছেন।
অভিযোগের তদন্ত অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ কনি মিয়া (বিপিএম) বলেন সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ পাওয়ার পর সঠিক তদন্ত চলমান আছে, তদন্ত শেষ করে আমরা আইনগত বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। হোটেলের ব্যবসার
আড়ালে মাদক দ্রব্য বিক্রয় ও পতিতা ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আমরা তদন্ত করছি সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী কর্তৃক সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ডুমুরিয়া উপজেলা শাখা সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন নিন্দার বিবৃতি অব্যাহত আছে । তারা বলেছেন এইভাবে একটি নিবন্ধিত প্রেস ক্লাবের ভিতরে ঢুকে সন্ত্রাসী ও মাদক
ব্যবসায়ী কর্তৃক সাংবাদিককে প্রহার ও লাঞ্ছিত করা খুবই দৃষ্টিকটু ও প্রশাসনের জন্যও লজ্জাজনক বিষয়। যেখানে সাংবাদিকেরা রাষ্ট্রীয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড প্রচার ও প্রসারের জন্য নিয়মিত
অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে জনগণের সামনে তুলে ধরে চলছে সেখানে সন্ত্রাসী কর্তৃক এহেন কর্মকান্ড রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল ছাড়া আর কিছু নয়। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা সহ দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান