মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি।
দিনাজপুরের বাজারে চাল ও আটার দাম হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ ঝুকছেন (ওপেন মার্কেট সেল) ওএমএস এর দিকে। তবে সাশ্রয়ী দামে পণ্য দুটি কিনতে খাদ্য অধিদফতরের ওএমএসের দোকানে দীর্ঘ লাইন ধরে ৩০ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজি আটা ক্রয় করছে নিম্নআয়ের মানুষ।
৩০ টাকা কেজিতে চাল ও ২৪ টাকা কেজিতে আটা কিনতে ক্রেতারা ওএমএসের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন । কেউ কেউ ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই নির্ধারিত স্থানে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। ডিলার অথবা ট্রাক সেল সবখানেই এখন দীর্ঘ লাইন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে পণ্য।
২৮ নভেম্বর সোমবার সকালে দিনাজপুর পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের কালিতলা হরিসভা ও ১২ নং ওয়ার্ডের পুলহাট নতুন বাজার ডিলার পয়েন্ট ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। পুলহাট নতুন বাজার এলাকায় ওএমএসের চালের জন্য লাইনে দাঁড়ানো দিনমজুর আকবর আলী বলেন, চালের জন্য সকাল ৭ টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। ৯ টার দিকে চাল বিক্রি শুরু হয়। পাঁচ কেজি চালের জন্য দুই থেকে আড়াই ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়। এরপরও চাল কিনতে পারলে খুশি। অপরদিকে জামিলা বেগম বলেন, ৩০ টাকা করে পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারলে, বাজারে থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কম দাম পড়ে। এজন্য ওএমএসের চাল কিনি। এখন যে চাল দেয়া হচ্ছে, সেটি মানে ভালো। এ দিকে, ক্রেতার চাপ বেশি থাকায় কিছুটা কম দামে জীবন ধারণের অপরিহার্য এ দুটি পণ্যর চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন ডিলাররা। ওএমএসের চাল ও আটা বরাদ্দ পাওয়া বিভিন্ন ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতাদের চাপ অনেক বেশি থাকায় তারা যে চাল ও আটা বরাদ্দ পাচ্ছেন, তা অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। ফলে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডিলারদের।
ডিলারদের দাবি, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ কম। বর্তমানে একজন ডিলার সর্বোচ্চ ১ মেট্রিক টন চাল ও ১ মেট্রিক টন আটা বরাদ্দ পান। এ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
চাল ও আটার বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দিনাজপুর পৌর এলাকার ১২ নং ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার রাজু কুমার দাস বলেন, এখন চাল ও আটার জন্য ক্রেতাদের অনেক চাহিদা। আমি এক হাজারনকেজি চাল ও ১ হাজার কেজি আটা পাই। এ চাল ও আটা দেখতে দেখতে বিক্রি হয়ে যায়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। বিক্রি শেষ দিকে যখন চোখে পড়ে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ এখনো লাইনে দাঁড়িয়ে অথচ আমাদের কাছে পর্যাপ্ত চাল-আটা মজুদ নেই তখন প্রত্যেক জনকে ৩ কেজি করে চাল-আটা দিতে হয়। যেনো কেউ ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার পর খালি হাতে ফিরে না যায়।
৫নং ওয়ার্ডের ডিলার মাসুদ রানা বলেন, বাজারে বর্তমানে চাল ও আটার চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে নিম্ন আয়ের মানুষরা ওএমএসের চাল কিনতে ছুটে আসছেন। অনেকে ভোর ৬টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ক্রেতাদের যে চাহিদা তাতে চাল ও আটা বিক্রি করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। খাদ্য অধিদপ্তর ওএমএসের বরাদ্দ বাড়িয়ে দিলে নিম্নআয়ের মানুষ প্রতিজন দীর্ঘ সময় লাইনে না দাঁড়িয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই চাল-আটা নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরতে পারবেন।