নড়াইলে খোয়া যাওয়া ভিজিএফ এর ৬ বস্তা চাল দুদিন পর পাওয়া গেলো সচিবের রুমে
মোঃ হাচিবুর রহমান,নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে দুস্থ্যদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল বিতরন করা হয়।
১৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ইউনিয়ন পরিষদে এ চাল বিতরন করেন পহরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম। বিতরন শুরু করে ৪৬২ পরিবারের মধ্যে ৩৮৪ পরিবারের মাঝে বিতরন করার পরে ঐদিনই বিতরনের মধ্যে হিসাব করে দেখেস ভিজিএফের ৬ বস্তা চালের হিসাবে সট দেখা যায়।পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানান। ৬ বস্তা চাল সট থাকার বিষটি জানাজানি হলে ঝামেলা মনে করে ৬ বস্তা চাল গায়েবের বিষয়টি ঢাকতে সকল মেম্বারদের নিয়ে চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক মিংটিং করেন। পরে সংবাদিকরা পরিষদে এসে ৬ বস্তা চাল সটের বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কোনো উত্তর দেননি।কিন্ত ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম কবির তপন রেগে গিয়ে বলেন আপনারা কেনো আসছেন। নাটক করতে আসছেন।কোনো চালের সট নাই।ঠিক আছে আপনারা চলে যান।একথা বলার পরে চেয়ারম্যানকে নিয়ে দ্রুত পরিষদ ত্যাগ করেন।
চাল বিতরণ কার্যক্রমের ট্যাগ অফিসার ইউপি কৃষি কর্মকর্তা স্বপন কুমার মিত্র বলেন,ইউনিয়নে ৪৬২ জন অসহায় ও দুস্থ্য মানুষদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল বিতরনের প্রথম দিনে ৩৮৪ জনকে চাল দেওয়া হয়েছে বাকি ৭৮ জনের বিপরীতে ২৬ বস্তা চাল স্টকে রয়েছে। ওই চালের ষ্টক ও মাষ্টারোল দেখতে চাইলে চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম ও ইউপি সচিব তৌফিকুর ইলাহি দেখানো যাবেনা বলেন। এসময় ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য গোলাম কবির তপন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচারন করেন।
গোডাউন চেক করে পূর্বের থাকা ভিজিডির ৬বস্তাসহ মোট
২৬ বস্তাই পাওয়া যায়।কিন্তু গোডাউনে থাকার কথা ভিজিএফ এর ২৬ বস্তা ও ভিজিডির ৬ বস্তাসহ মোট ৩২ বস্তা। কিন্তু সেখানে পাওয়া ভিজিডির চালসহ মোট ২৬ বস্তা। হদিস নেই ভিজিএফ এর ৬ বস্তা চাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা জানান,ভিজিএফ এর ৬ বস্তা চাল হিসাবে সট পরেছে।তবে চাউল গুলো কিভাবে কি হলো আমরা জানিনা।তপন মেম্বার চাল আনতে গেছিলো গোডাউনে।
পরে ভিজিডির চাল দিয়ে গোঁজামিলে সাংবাদিকদের দেখানো হয়েছে। এছাড়া ওজনে ১০ কেজি দেওয়ার কথা থাকলে দেওয়া হয়েছে ৯ কেজি এমন অভিযোগ করেছে উপকার ভোগীরা।
পহরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলামের কাছে ৬ বস্তা চাল গায়েব ও ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
এ ঘটনাটি মঙ্গলবার সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনু সাহাকে অবহিত করলে তিনি বৃহস্পতিবার সরেজমিনে এসে তদন্ত করবেন বলে জানান।
এ দিকে বৃহস্পতিবার পরিষদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসার কথা শুনে ২ দিন পর সকাল বেলা সেই ৬ বস্তা চাল সচিবের গোপন রুম থেকে গোডাউনে নেয়ার সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ভিডিও ধারন করে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার সাংবাদিকরা গোডাউনে ২৬ বস্তা চাল ছাড়া সচিবের গোপন রুমসহ সব স্থানে খুজে আর কোনো চাল দেখতে পায়নি।কিন্তু আজ বের হলো সচিবের রুম থেকে সেই চালের বস্তা।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনু সাহা পরিষদে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকদের কথা শুনে। যাচাই করে ও তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে চেয়ারম্যানসহ যারা যারা জরিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।