নামাজ পড়তে গিয়ে অটোরিকশা হারানো সেই রশিদের পাশে দাঁড়ালেন তাসরিফ
মোঃ রাকিব হোসেন ,স্টাফ রিপোর্টার :
নামাজ পড়তে এসে অটোরিকশা হারানো প্রতিবন্ধী রশিদের পাশে দাঁড়ালেন কণ্ঠশিল্পী তাসরিফ খান। শনিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা চৌরাস্তায় যান তাসরিফ খান।
সেখান থেকে আব্দুর রশিদকে তাসরিফের ব্যক্তিগত গাড়িতে তুলে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকায় নিয়ে যান।
সেখানে তাসরিফ স্কোয়াড গাজীপুর টিমের সদস্যরা তাসরিফের উপস্থিতিতে পা হারানো অটোরিকশাচালক আব্দুর রশিদের কাছে একটি অটোরিকশা হস্তান্তর করবেন।
শনিবার সন্ধ্যায় তাসরিফ খান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রশিদের অসহায়ত্বের সংবাদ প্রকাশ হয়। শুক্রবার রাতে আমি তা জেনে রশিদের খোঁজ চেয়ে কমেন্ট বক্সে লিখি।
তিনি বলেন, শনিবার সকালে রশিদের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিকেলে মাওনা চৌরাস্তায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি এবং তার অসহায়ত্বের কথা শুনে রশিদকে একটি অটোরিকশা কিনে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
এছাড়াও গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির মোড়ল ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন রশিদকে। এ সময় তিনি বলেন, আব্দুর রশিদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আমাকে খুব ব্যথিত করেছে।
আমি এতে মর্মাহত। অটোরিকশা চুরি যাওয়ার খবর পেয়ে সাথে সাথে রশিদের সাথে যোগাযোগ করি এবং একটি অটোরিকশা কেনার সহযোগিতা বাবদ ২৫ হাজার টাকা তাকে দিয়েছি।
এ সময় অটোরিকশা চালক আব্দুর রশিদ জানান, ছোট বয়সে একটি দুর্ঘটনায় এক পা হারাতে হয় তার। বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ ঘরে ২১ দিন বয়সী শিশু সন্তান, ২ বছর বয়সী ছেলে, স্ত্রী, মা ও বাবাকে রেখে উপার্জনের জন্য অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন।
তার অটোরিকশার উপার্জনেই চলে সংসার খরচ। সারাদিনের উপার্জনের টাকায় ইফতার তৈরির খাবার কেনার কথা ছিল।
তিনি বলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তার পুকুর পাড় জামে মসজিদের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর অটোরিকশাটি রেখে আসরের নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে রেখে যাওয়া অটোরিকশা না পেয়ে অসহায়
হয়ে পড়েন। মাথায় ভর করে চুরি যাওয়া অটোরিকশা মেরামতের জন্য আশা এনজিও থেকে নেওয়া ষাট হাজার টাকার সাপ্তাহিক ১৫০০ টাকার কিস্তি ও আট সদস্যের সংসার খরচের।
তিনি বলেন, এক পা না থাকায় আমি সব ধরনের কাজ করতে পারি না। অটোরিকশা চুরি যাওয়ার পর আমার ওপর আকাশ ভেঙে পড়েছিল। কিস্তি ও সংসার খরচ কি করে চালাবো সেই চিন্তায় অস্থির ছিলাম।
সবশেষ আল্লাহ্ তাসরিফ ভাইকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে একটি অটোরিকশা কিনে দিচ্ছেন। ছাত্রলীগ নেতা নাছির মোড়ল ভাইয়ের দেওয়া ২৫ হাজার টাকা ও মাওনা চৌরাস্তার পুকুর পাড় জামে মসজিদের মসুল্লীদের দেওয়া টাকায় আমি আশা এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করবো।