নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো এবং সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন প্রান্তজন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডব্লুজিইডি) এর উদ্যোগে আজ রোববার সকাল ১১ টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনোমিক্স, জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশের জন্য সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যৃৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) প্রণয়ন করছে। এর আগে ২০১০ ও ২০১৬ সালেও জাইকার সহোযোগিতায় বিদ্যুৎ খাত বিষয়ক মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি) প্রনয়ন করা হয়েছিল। এগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল আমদানি-নির্ভর কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটে এখন বাংলাদেশ গুরুতরভাবে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতিতে ভুগছে। ফলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করেও বিদুৎ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌর ও বায়ুবিদুতে বিনিয়োগ করলে বর্তমান সংকট এতটা গভীর হতো না।
বক্তারা আরো বলেন আইইপিএমপি প্রনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চরম ঘাটতি রয়েছে। জাইকা বা বাংলাদেশ সরকার -কোন পক্ষই এই পরিকল্পনা তৈরীর বাজেট ও কার্যক্রম প্রকাশ করেনি। জাপানের কারিগরি সহায়তার অধীনে গোপনে জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে জাইকা এই কাজ করছে যা ওইসিডিভুক্ত দেশ হিসাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ২০৪১ সালের মধ্যে জলবায়ু-সহিষ্ণ উচ্চ আয়ের দেশে পরিনত হবার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহন করে । এর আলোকে ওই বছরই ডিসেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়াারি মন্ত্রীপরিষদ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেয়। এতে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইইপিএমপি’র চতুর্থ খসরা তৈরি করা হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রির ঘোষনার বিরুদ্ধে গিয়ে। এই খসড়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ তথাকথিত ‘পরিছন্ন জ্বালানির’র লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। পরিছন্ন জ্বালানির আওতায় উন্নততর প্রযুক্তির নামে আমদানি-নির্ভর অনির্ভরযোগ্য তরল হাইড্রোজেন, আ্যামোনিয়া ও কার্বন সংরক্ষন প্রযুক্তি প্রবর্তনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যা দেশের অর্থনীতির ক্ষতিকর হতে পারে। এছাড়া খসড়া পরিকল্পনায় ২০৫০ সাল নাগাদ ৩০.৭% জ্বীবাশ্ম জ্বালানি (প্রধানত কয়লা ও এলএনজি), ৩২.৮% তথাকতিথ উন্নততর প্রযুক্তি এবং মাত্র ১৭.১% নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যাবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ২০৪১-ও অধীনে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা ও নিরাপদ পরিবেশ সংরক্ষনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি।প্রান্তজন’র নির্বাহি পরিচালক এস এম শাহাজাদা এর সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আমরা কলাপাড়াবাসীর সভাপতি নজরুল ইসলাম, এনজিও প্রতিনিধি পলাশ মোড়ল, যুব প্রতিনিধি ইমরান হোসেন পিয়াল, রিক্তা ইসলাম, তাসফিয়া ইসলাম পর্ণা প্রমূখ।