স্টাফ রিপোর্টার:
তিন সপ্তাহ নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে পদ্মায় মাছ ধরতে নেমেছে জেলেরা।যাদের একমাত্র জীবন জীবিকার প্রধান পথ হল মাছ ধরা। কিন্তু সন্তুষ্ট জনক ভাবে বর্তমানে জেলেদের জালে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না খুব কম জেলের ভাগ্যে ৪/৫ টি ইলিশ জুটছে। কিন্তু তাও আকারে ছোট। অন্যান্য মাছেরও দেখা মিলছে না তেমন; ফলে হতাশায় দিনযাপন করছে জেলেরা।
কলুর বলদের ন্যায় একটানা দিনরাত চেষ্টা করে বেড়াচ্ছে মাছ ধরার জন্য কিন্তু তাদের জালে ধরা পড়ছে-চিংড়ি, বাঁশপাতা,পিয়ালি, কাচকি,ঘেরে, রিটা, বেলে, বাতাসি ও বাচা মাছ। তাও পরিমাণে খুব সামান্য। যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে তাতে নৌকা, জালের খরচ উঠছে না তো বটেই এবং তা দিয়ে তারা কিভাবে তাদের প্রতিদিনের খরচ মেটাবে এই বিষয়ে তারা নিয়মিত চিন্তিত।
আজ সকাল ৬ টায় পদ্মার তালবাড়িয়া বালুরঘাট অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায় এই করুণ দৃশ্য। রাতভর জেলেরা মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত থেকে সকালবেলায় একে একে নৌকা নিয়ে ঘাটে ফিরছেন। সারারাত জালে পড়া মাছ দেখে জেলেরাই হতাশ কারণ এ মাছ বিক্রি করে তাদের হাজীরাই তো হবে না।
শামুখীয়া জেলে পল্লীর লালন সত্য কন্ঠকে বলেন এবার পদ্মায় কোন ইলিশ নেই বললেই চলে হঠাৎ এক দুইটা ধরা পড়ছে অন্যান্য মাছের সাথে । লালন আরো বলেন ছোটবেলা থেকে বাপ-দাদার সাথে অন্যান্য কর্মের পাশাপাশি নদীতে মাছ ধরছি। মাছের এমন অকাল এর আগে কখনো দেখিনি মাছ।না পেয়ে আমরা যে কষ্টে আছি তা বলে বোঝাতে পারবো না।
শাড়ার ব্রিজের পাশে ৫ নম্বর ঘাটের জেলে আমিরুল ইসলাম মন্ডল “সত্য কন্ঠ”কে জানান একটি নৌকাতে চার থেকে পাঁচজন মিলে সারাদিন মাছ ধরে জাল, নৌকা ও শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিনের খরচ মেটানো শেষে জেলেদের ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা হয়।
জেলেরা আরো বলেন, আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর অনেক আশা নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছি কিন্তু আমরা সবাই এখন হতাশাগ্রস্ত আমরা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকাও জাল কিনেছি মাছ ধরে এটা বিক্রি করে পরিশোধ করতে হবে কিন্তু এবার মাছ ধরতে আমাদের খাওয়ার টাকায় হচ্ছে না কিভাবে ঋন পরিশোধ করব?
সাড়ার ব্রিজ সংলগ্ন সাড়া মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, এ ঘাটে জেলেরা প্রায় ৫০০ জন,এখানকার জেলেরা বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরে থাকেন। বর্তমানে খুব একটা মাছ ধরা পড়ছে না তাদের জালে। সারারাত পাঁচ জন জেলে নৌকায় জাল টেনে ৫ কেজি মাছ ধরতে পারছে না। কিন্তু অন্যান্য সময় সারা রাতে ১৫ থেকে ২০ কেজি মাছ ধরা পড়তো এমন দুর্দিন জেলেদের আমি আগে কখনো দেখিনি।