প্রকাশ্যে ঘুরছে ইভার হত্যা কারীরা: খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ!
সোহেল রানা রাজশাহী
মোসাঃ সাইমা আরাভী ইভার হত্যাকারী গ্রেফতারী পরওয়ানাভুক্ত ৬ জন আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়লেও খুঁজে পাচ্ছেনা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)র কর্নহার থানা পুলিশ। গত ৩জুলাই রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ থেকে আসামীদের নামে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি হয়। গ্রেফতারী পরওয়ানাভুক্ত আসামীরা থানার আশে পাশে ঘুরে বেড়ালেও তাদের খুঁজে পাচ্ছেনা বলে দাবি করছে কর্নহার থানা পুলিশ।
গ্রেফতারী পরওয়ানাভুক্ত আসামীরা হচ্ছেন ০১ নাজমুল মাহমুদ পলাশ (৩০), পিতা মুসলেম উদ্দিন,০২ আনজুমান আরা(৫০) স্বামী মুসলেম উদ্দিন, ০৩ আমিনুল ইসলাম আমিন (৩৫) পিতা এনায়েত আলী, ০৪ আরিফুল ইসলাম মধু (৩২)পিতা মুকবল হক, ০৫ ইমন,পিতা আঃ রশিদ ও ০৬ আকবর আলী (৫৫) পিতা মইজুদ্দিন,সর্বসাং দেবরপাড়া ,থানা কর্নহার। তবে পুলিশ বলছে ৬জন না তিন জনের হাইকোট থেকে জামিনে আছে বাকি তিন জনকে খুজছে পুলিশ ।
জানা যায়, মোসাঃ সাইমা আরাভী ইভা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ থেকে ৩য় স্থান পেয়ে মাস্টার ডিগ্রী পাশ করে সরকারী চাকুরীর চেষ্টায় ছিল। এ সময় মোসাঃ সাইমা আরাভী ইভা ও আসামীদয় এর বাড়ি একই গ্রামে। এর সুবাদে ইভার হত্য মামলার ১নম্বর আসামী নাজমুল মাহমুদ পলাশ ও ইভার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে পারিবারিক ভাবে ইভার বিয়ে ঠিক করে ফেললে ইভা পলাশকে প্রত্যাখান করায় বাদীর ভাগ্নিকে নানা ভাবে রাস্তাঘাটে উত্যাক্ত ভয় ভীতি দেখায় যে অন্য কাউকে বিয়ে করলে ইভাকে এ্যাসিড মেরে তোর মুখ পুড়িয়ে দিব এবং আমার কাছে তোর যে সকল ছবি আছে সেগুলি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিবে।
এর মধ্যে বাগমারার মোঃ নাজমুল হাসান শাওন (বিসিএস) এর সাথে গত ১৪/০১/২০২৩ ইং তারিখে ইভার পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেয়। ইভার বিয়ের সংবাদ পেয়ে আসামীগন ইভা ও তার পরিবারের প্রতি ভীষণ ক্ষুব্ধ হয় এবং যেভাবেই হোক ইভার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এরপর ১৫/০১/২৩ ইং তারিখে বাদীর ভাগ্নি ইভা লক্ষীপুর এলাকায় একটি বিউটি পার্লার থেকে কাজ শেষে দুপুর ১.০০ ঘটিকার সময় বের হলে ৩নং আসামী আমিনুল ইসলাম আমিন ইভাকে ডেকে বলে যে, নাজমুল মাহমুদ পলাশের (১নংআসামী) সাথে যদি দেখা না কর তাহলে সে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আত্মহত্যা করবে। তুমি এক মিনিট কথা বলে চলে আসবে।
আমরা তোমার কোন ক্ষতি করব না। ইভাকে ভালভাবে কোন কিছু বুঝতে না দিয়ে ১টি অচেনা কাজী অফিসে নিয়ে গেলে ভিকটিম ইভা সেখানে ১নং আসামী সহ অন্যান্য সকল আসামীকে দেখে। অতঃপর ঐ অচেনা ঘরে জোর পূর্বক অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় ১নং আসামী অচেনা কাজীর মাধ্যমে ভিকটিম ইভাকে বিয়ে করে। অত:পর আসামীগন ২ পাতা বিশিষ্ট ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়। ইভার সাথে ১নং আসামী কোনরুপ যোগাযোগ করতে না পারায় অন্যান্য আসামীগনের উস্কানিতে ১নং আসামী তার ব্যবহৃত মোবাইল সেট থেকে ভিকটিমের কথিত বিয়েব এফিডেভিট সহ বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি সহ বিভিন্ন প্রকার আপত্তিকর ম্যাসেজ ইভার স্বামী মোঃ নাজমুল হাসান শাওন (বিসিএস) এর মোবাইল সেটে পোষ্ট করে। তখন এই সকল ছবি বোনের বাড়ী এসে বাদীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দেখায় স্বামী মোঃ নাজমুল হাসান শাওন । ইভার ইচছার বিরুদ্ধে আসামীগন এইরুপ জঘন্য কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ায় ভিকটিম আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এবং বাধ্যকর পরিস্থিতিতে ১৯/০১/২৩ তারিখ বৈকাল ৫ঘটিকায় নিজ ঘরে অতিরিক্ত মাত্রায় হাইপার টেনশনের ট্যাবলেট সেবন করে! কিছুক্ষনের মধ্যে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে ইভাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অতঃপর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ভিকটিম ২০/০১/২৩ তারিখ ভোর ৫.৪৫ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করে।
এ ঘটনার বিষয়ে মৃত ইভার মামা মনোয়ার হোসেন মিন্টু থানায় এজাহার করতে গেলে থানার পুলিশ নানা ভাবে ঘুরাতে থাকে এবং পরিশেষে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করতে পরামর্শ দেন। ভিকটিমের মৃত্যুতে পিতা মাতা অসুস্থ থাকার কারনে বাদী বিজ্ঞ আদালতে আসামীগনের বিরুদ্ধে অত্র মামলা করছেন। য়ে মামলায় আদালত গত ৩জুলাই রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ থেকে আসামীদের নামে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি করেন।
এ বিষয়ে কর্ণহার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল চন্দ্র বলেন, ৬জনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকলেও তিন জনের হাইকোট থেকে জামিনে আছে বাকি তিন জনকে খুজছে পুলিশ।