বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চলছে নৌকা তৈরী ও মেরামতের ধুম
জাফরুল সাদিক, সত্যকন্ঠ বগুড়া ঃঃ
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চলছে নৌকা তৈরী ও মেরামতের ধুম। উপজেলার যমুনা-বাঙ্গালী নদী ও বিভিন্ন বিলে পানি বাড়ছে। বর্ষার আগমনকে ঘিরে নৌকার কারিগরদের মহাব্যস্ততা। বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় তৈরী হচ্ছে নৌকা। পানি আরেকটু বেশি হলে আরো
কদর বাড়বে এসব নৌকার। তাই বসে নেই নৌকা তৈরীর কারিগররা।গ্রাম এলাকায় মৌসুমি ডিঙ্গি নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মাঝি ও কারিগররা। নৌকা তৈরির এমন দৃশ্য চোখে পরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
যমুনা-বাঙ্গালী নদী ও বিলে মাছ ধরা, এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হয় নৌকা। নদীতে নতুন পানি আসার সাথে সাথে চর ও বিল অঞ্চলে ধুম পড়েছে নৌকা তৈরির। তাছাড়াও চলছে পুরাতন নৌকা মেরামত করে সচল করার
ধুম। নৌকার পাশাপাশি জেলে সম্প্রদায়ের লোকেরা এখন ব্যাস্ত সময় পার করছে জাল বুনানোর কাজে। নতুন নৌকা আর জাল দিয়ে মাছ ধরতে নামবেন জেলেরা। তাই নৌকা জেলেদের আশা আকাঙ্ক্ষা আর সংসার চালানোর একমাত্র হাতিয়ার।
উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের নান্দিয়ার পাড়া গ্রামের নৌকা তৈরির কারিগর সাজু বলেন, এখন ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে, বড় নৌকা,মাঝারি আকারের নৌকা ও জেলেদের মাছ ধরার নৌকা বানানোর কাজে। চাহিদা মোতাবেক ছোট, বড় বিভিন্ন রকম নৌকা বানানো হয়। তবে ছোট আকারের মাছধরা নৌকা বেশি বেচা-কেনা হয়। নৌকাগুলো
আকার ভেদে ৮হাজার থেকে ২লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়।বড়ইকান্দি বিমান বন্দর পাড়ার নৌকা তৈরির কারিগর বলেন, আমি ছোট থেকেই নৌকা তৈরির কাজে জড়িত। আগে ভালো ভালো কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হতো। এখন শিমুল, আম, কড়ই, আকাশমনি কাঠ দিয়ে বেশি নৌকা তৈরি করা হয়। নৌকা তৈরিতে কাঠ ছাড়াও মাটিয়া তৈল,
আলকাতরা, তারকাঁটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি লাগে, যা নৌকাকে দীর্ঘদিন টেকসই রাখে। ইন্দুর মারা চরের নৌকার মাঝি আলমগীর হোসেন জানান, যমুনায় ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুম এলে নদীতে বন্যা দেখা দেয়। আর সে সময় নৌকার চাহিদা দিগুণ হয়।
প্রতি বছর শতাধিক নৌকা মেরামত হয়, আবার শতাধিক নৌকা নতুন করে তৈরি হয়ে থাকে। নতুন তৈরি নৌকা দিয়ে বেশিরভাগই যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। তাই পুরাতন নৌকা মেরামত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আবার নতুন নৌকা তৈরির কাজও চলছে।
কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, একসময় পালতোলা ডিঙ্গি নৌকা বেশি ব্যবহার হতো। এখন মানুষের প্রয়োজনে বড়বড় নৌকা তৈরি হচ্ছে। এখন আর নাম থাকে না নৌকার। নৌকা তৈরিতে বিশেষ কোনো কাঠ ব্যবহার হয় না।