মোহাম্মদ এরশাদ,বাঁশখালী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় অংসখ্য ইট ভাটা গড়ে উঠেছে। যার অধিকাংশই অবৈধ ও লাইসেন্সবিহীন।আবার এসব ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে বনের গাছ। এসব ইটভাটায় প্রকাশ্য পাহাড়ি কাঠ পুড়িয়ে গেলেও তা এখনও প্রশাসনের নজরদারির বাইরে রয়েছে।
কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে পাহাড় যেমন বৃক্ষশূণ্য হয়ে পড়ছে, অপরদিকে পরিবেশের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠা ইট ভাটা গুলোর কারণে এলাকার মানুষের মাঝে নানা ধরনের রোগব্যাধীও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা ইটভাটা গুলোর মধ্যে রয়েছে- পুকুরিয়ায় ১টি, সাধনপুর লটমনি পাহাড়ে ৩টি, বাঁশখালী সাতকানিয়া সীমান্তের চূড়ামণি এলাকায় ২টি, বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে ৩ টি, চাম্বলে ১টি, শেখেরখীলে ১টি, দক্ষিণ জলদী পাহাড় সংলগ্ন ১টি ইট ভাটা রয়েছে।
যেগুলোর অধিকাংশ নির্মাণে মানা হয়নি সরকারি নিয়মনীতি। যেমন পুকুরিয়া চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় সরকারি নির্দেশনা না মেনে জিকজ্যাগের পরিবর্তে লম্বা চিমনি দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মেসার্স চৌধুরী ব্রীক নামের ১টি ইট ভাটা। বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে কৃষি জমিতে সামান্য ব্যবধানে গড়ে তোলা হয়েছে ৩টি ইটভাটা। যে গুলো অত্যন্ত কাছাকাছি ও লোকালয়ের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় কালো ধোঁয়ায় পরিবেশের যেমন মারাত্মক ক্ষতি করছে, তেমনি ধানি জমিতে গড়ে তোলায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ধানি জমি গুলো।
সূত্রমতে, ইট ভাটায় একবার ইট পোড়াতে প্রায় চার হাজার মন কাঠ পোড়াতে হয়। এসব কাঠ জোগাড় হচ্ছে আশপাশের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই। যার ফলে উজাড় হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চল, বৃক্ষ শূণ্য হয়ে পড়ছে পাহাড়। পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন স্বত্বেও অবৈধ ভাবে ইট ভাটা গুলোতে পাহাড়ি কাঠ পুঁড়িয়ে যাচ্ছে যা প্রশাসনের নজরদারির বাইরে।
চাম্বল বনবিট কর্মকর্তা শেখ আনিসুজ্জামান বলেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ইটভাটাগুলোতে পাহাড় কাটা ও কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধ রয়েছে। তবে পরিবেশ বান্ধব নিয়ম অনুসারে ইটভাটা হলে বন বিভাগের কোন আপত্তি নাই। যে সমস্ত ইটভাটা পরিবেশ বান্ধব নিয়ম না মেনে পাহাড়ি মাটি বা কাঠ ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কেউ যাতে পাহাড় থেকে মাটি ও কাঠ না কাটে সেই জন্য কঠোর ভাবে নজরদারীতে রাখা হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,যেসব ইটভাটায় অবৈধভাবে পাহাড়ি কাঠ পুড়িয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটাগুলো অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়।