বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেনু পোনা শিকারের মহোৎসব
পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বুড়াগৌরঙ্গ-তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেনু পোনা শিকারের মহোৎসব। এর ফলে প্রতিদিন ধংশ হচ্ছে লাখ লাখ দেশিও প্রজাতির মাছের পোনা। নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন কয়েক শত নারী পুরুষ ও শিশুরা মশারী জালের মাধ্যমে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেনু পোনা আহরন করছে।
জালে রেনু পোনার সাথে উঠে আসে শত প্রকারের দেশিও মাছের হাজার হাজার পোনা। রেনু আহরনকারীরা শুধু বাগধা ও গলদা চিংড়ির রেনু পোনাগুলো বেছে আলাধা পাত্রে রেখে বাকী সব মাছের পোনা ফেলে দিচ্ছে নদীর তীঁরে। এতে ধংশ হচ্ছে শত শত প্রকার দেশি মাছের রেনু পোনা। দেশের দক্ষিন অঞ্চলের জেলাগুলোতে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেনু পোনার বিশেষ চাহিদা থাকায় দশমিনার শত শত মৌসুমী জেলেরা নিশিদ্ধ মশারী জালের মাধ্যমে রেনু নিধন করে যাচ্ছেন।
বুড়াগৌরঙ্গ-তেতুলিয়া নদীর তীরবর্তি এলাকাগুলোতে রয়েছে রেনুপোনা ক্রেতাদের শক্ত সিন্ডিকেট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন সুত্র জানান, এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য বেল্লাল হোসেন, এব্যাপারে মুঠো ফোনে বেল্লাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন। একটি রেনু পোনা স্থানীয় মহাজনদের কাছে বিক্রি করেন ২ থেকে ৩ টাকা, কিন্তু মহাজনরা বিক্রি করেন ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত।
এ পেশা অনেক লাভ জনক হওয়ায় বিভিন্ন পেশার নারী, পুরুষ ও শিশুরা ঝুঁকে পড়ছে রেনু আহরনের পেশায়। কে কত রেনু আহরন করতে পারে তা নিয়ে তাদের মধ্যে চলে প্রতিযোগীতা। রেনু শিকারীরা জানান, উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গভীর রাতে মিনিট্রাকে ও ট্রলারযোগে মহাজনেরা রেনু পোনা নিয়ে যান বরিশালে। সেখান থেকে চলে যায় খুলনা, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
দশমিনার কাটাখালী গ্রামের বাগদা শিকারী স্বপন বলেন জোঁবা ভালো হলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেনু সংগ্রহ করে ৬শত থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত উর্পাজন করা যায়।
শিশু বাগদা শিকারী হেমায়েত, রাশেদ, মনির জানান, রেনু পোনা ধরা নিষেধ হলেও কেউ তাদের কোন দিন বাধা দেয়নি। স্থানীয় একাধীক সুত্রে যানাযায়, বাঁশবাড়িয়া, কাঁটাখালী, হাজীর হাট, গোলখালী, আউলিয়া পুর, হাদীর চর, পাতার চরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় সহস্রাধীক জেলে প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ রেনু পোনা শিকার করেন। আর এতে প্রতিদিন দেশীয় মাছের লক্ষ লক্ষ রেনু পোনা নিধন হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক শ্রেনির মুনফা লোভী আড়ৎদাররা বাগদা রেনু শিকারে গরীব জেলেদের উৎসাহ দিচ্ছে। এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, বাগদা ও গলদা রেনু নিধনের ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের অনেক ক্ষতি হয়। ইতিমধ্যে আমরা অভিযান চালিয়ে অনেক জাল জব্দ করে ধংস করেছি, রেনুপোনা রক্ষায় ভবিষৎয়েও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।