মোহাম্মদ এরশাদ বাঁশখালী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগান সংযোগ সড়কের বেহাল পরিস্থিতিদেখার নেই কেউ ,যাতায়ত ভোগান্তির অন্তত নেই রপ্তানি কারক ও দর্শনার্থীদের।
চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগানটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৪’শ ৭২ দশমিক ৫৩ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত বেল গাঁও চা বাগান।এই চা-বাগানে উৎপাদিত চায়ের যেমনি রয়েছে পুষ্টিগুণ তেমনি এই চায়ের কদরও রয়েছে দেশজুড়ে।
স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন,জমির ড্রাইভার দর্শনার্থী মোহাম্মদ শাহেদসহ বেশ কয়েকজন লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়,চা-বাগানে প্রতিদিন অন্তত ৪/৫’শ দর্শনার্থী আসে, সংযোগ সড়কটি সংস্কার না হওয়ার কারণে পুকুরিয়া চৌমুহনী
এলাকায় গাড়ি রেখে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ পর্যন্ত পথ পায়ে হেঁটে আসতে হয় দর্শনার্থীদের।তাছাড়া এই এলাকায় বসবাসরত কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল পর্যন্ত যেতে সমস্যা হয়, তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্যে সরকারের কাছে দাবি জানান তারা।
বেলগাঁও চা-বাগানের ম্যানেজার ও বাংলাদেশ চা সংসদ চট্টগ্রাম এর চেয়ারম্যান আবুল বাশার বলেন,পুষ্টি ও গুণগত দিক দিয়ে এই বাগানে উৎপাদিত চা দেশব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে, এতে নারী-পুরুষ প্রায় ৮শ’র অধিক চা শ্রমিক নিয়মিত চা পাতা সংগ্রহ ও বাজারজাত করণের কাজ করে থাকেন, আর চা শ্রমিকদের বেতন
ভাতা,সাপ্তাহিক, চাউল, ডাল,আটা ও চিকিৎসাসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন চা-বাগান কতৃপক্ষ,এছাড়াও তাঁদের পরিবারের কোমলমতি শিশুদের লেখা-পড়ার জন্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, চিকিৎসা, বাসস্থান ও খেলাধুলার মাঠও রয়েছে।তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারি করা হলে শ্রমিক পরিবারের শিশু শিক্ষার্থীদের জন্যে আরো ভালো হবে মনে করেন ব্যবস্থাপক আবুল বাশার।
এসময় তিনি আরো বলেন, পুষ্টিগুনে গুণান্বিত চা পাতা উৎপাদনে দেশজুড়ে পরিচিত বাঁশখালীর চাঁদপুর বেলগাঁও চা-স্পট অপশনে দেয়া চা-পাতা রপ্তানি হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, দেশের খ্যাতিনামা বড় বড় কোম্পানি গুলো এই বাগান থেকে উৎপাদিত চা পাতা সংগ্রহ করতে আসে।
এই চা-পাতার প্রতি রপ্তানি কারকদের বেশি আগ্রহ থাকা সত্বেও বাগান সংযোগ সড়কটি সংস্কার বিহীন হওয়ার কারণে কোম্পানির গাড়ী গুলো আসতে পারছেনা,তাঁদের ভোগান্তির অন্ত থাকেনা,এছাড়াও চা-শ্রমিকসহ প্রায় ২/৩ হাজার মানুষের বসবাস করেন এই এলাকায়,
সবাই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে,দীর্ঘ এক যুগের অধিক সময় সড়কটি সংস্কার না হওয়াতে ভোগান্তি কাটছেনা।
সড়কটি সংস্কারের জন্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম প্রকৌশলী (এলজিডি)বরাবর আবেদন করেছিলাম,এলজিডি কতৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার হয়নি,তাই দেশের অন্যতম চা-উৎপাদন স্পট সংযোগ সড়কটি সংস্কার করে দেশের উন্নয়নের ধারাকে আরো প্রগতিশীল করার জন্যে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মুহাম্মদ গালিব সাদলী বলেন,চা-বাগানের জন্যে শুধু চা-বাগান এলাকাটি নয় বরং পুরো বাঁশখালীই দেশব্যাপী পরিচিত, তাই চা-বাগান সংযোগ সড়কটি সংস্কার করা খুবই জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন,চা-বাগানটি দেশের উৎপাদনশীল একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র,সুতরাং রপ্তানি কারকদের যাতায়াত সুবিধার্থে সড়কটি সংস্কার করা খুবই জরুরি বলে আমিও করি,যেহেতু চা-বাগানটি
দেশের উন্নয়নশীল বাণিজ্যিক প্রজেক্ট, কারো কোন একক স্বার্থ নয়,তাই আমি চাই চা-বাগান সংযোগ সড়কটি সংস্কার করা খুবই জরুরি, তবে প্রজেক্ট কতৃপক্ষকে এই ব্যাপারে সংস্কারের জন্যে আবেদন করতে হব।