ওবায়দুর রহমান, স্টাফ রির্পোটার :
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্ত্রী পরকীয়া প্রেমের কারণে স্বামীকে তালাক দেয়ার খবর শুনে শ্বশুরবাড়ি এসে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে পরিবারের দাবি আত্মহত্যা নয় মেরে ফেলার জন্য জোর করে বিষ পান করিয়েছে
শশুড় বাড়ির লোকজন। সে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী নাজমুল মাতুব্বর।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে বিষ পান করে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঢলে পরে। মুখে বিষের গন্ধ পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে
অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফরিদপুরে ভর্তি করা হয়।চিকিৎসারত অবস্থায় পরদিন (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি মারা যান। পরে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
নাজমুলের পরিবারের জানায়, নাজমুল বিদেশে থাকার কারনে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরে। পরকীয়া প্রেমের কারণে তাদের মধ্যে মনমানিল্য চলছিল। তাই গতকাল নাজমুলকে স্ত্রীর বাপের বাড়ি যেতে বলে। ঐ খানে গেলে স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে জোর করে বিষ পান
করায়। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজাতে হাসপাতালে ভর্তি করে। আত্মহত্যা করার জন্য নাজমুল বিষ পান করে এটা ওদের বানোয়াট সাজানো নাটক। নাজমুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে পরে আমাদের খবর দেয়। নাজমুলের স্ত্রীর সংঙ্গে ডিভোর্সের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এগন পর্যন্ত কোন ডিভোর্স পেপার পাই নি।
স্ত্রী মনিকার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের হাসমত শিকদারের মেয়ে মনিকার বিয়ে হয় নাজমুলের সঙ্গে। বিয়ের পর নাজমুল বিভিন্ন সময়ে মনিকাকে নির্যাতন করতো। বিবাহের চার বছরেও সংসারে শান্তি না থাকায় মনিকা গত ২০ ফেব্রুয়ারি নাজমুলকে লিখিতভাবে তালাক
নোটিশ পাঠায় । এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিষে পান করে শ্বশুরবাড়িতে আসেন নাজমুল। পরবর্তীতে মনিকার পরিবার উদ্ধার করে তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আজ নাজমলের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এই বিষয়ে হাসমত শিকদার বলেন, নাজমুলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন কারনে নির্যাতন করতো এতে চার বছরেরও সংসারে কোন শান্তি না আসায় গত ২০ তারিখে আমার মেয়ে তার স্বামীকে তালাক দেয়। পরে
নাজমুল বিষ খেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে ঢলে পরলে আমারা ওর মুখ থেকে বিষের গন্ধ পাই পরে ওকে ভাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে ওর পরিবার কে খবর দিই। আজ শুনলাম সে মারা গেছে। তবে আমার মেয়ে কোন পরকীয়া প্রেমে জড়িয়েছে সেটি মিথ্যা কথা।
নিহতের স্ত্রী মনিকার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে নিহতের মা বলেন, নাজমুল সৌদি আরব প্রবাসী। আমার ছেলে ওর স্ত্রী কে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু ওর না থাকার সুযোগ নিয়ে পার্শবর্তী এলাকার একটি ছেলের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়। গতকাল ওকে ডেকে নিয়ে ওর ২ টি ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায় মনিকার পরিবার। আমার ছেলেকে জোর করে বিষ খাইয়ে
হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থা খারাপ দেখে আমাদের পরিবার কে খবর দেয়। পরে আমরা ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে আজ মৃত্যুবরণ করে। আমারে ছেলে আত্মহত্যা করে নাই। ওরা আমার ছেলে কে হত্যা করেছে।