ভূমিসেবা সত্যিকার অর্থে নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে: সিনিয়র সচিব
চিফ রিপোর্টার:ঢাকা: বুধবার ২২ অক্টোবর (৬ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ);
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন; একসময় ভূমি অফিস মানেই ছিল দুর্ভোগ, হয়রানি ও জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সরকার ভূমিসেবা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। আজ ভূমিসেবা সত্যিকার অর্থে নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
আজ (বুধবার) রাজধানীর বিসিএস প্রশাসন একাডেমির সেমিনার কক্ষে ‘মানোন্নীত অটোমেডেট ভূমিসেবা সম্পর্কে রাজশাহী বিভাগের চারটি জেলার (বগুড়া, নওগা, চাপাইনবয়াবগঞ্জ ও রাজশাহী) কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের “ট্রেনিং অফ ট্রেইনার্স (টিওটি)”প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন; জনমনে ভূমি অফিস ও এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে নানাধরণের নেতিবাচক কথা হয়। আমরা চাই ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে তা দূর করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগ প্রযুক্তির উন্নয়ন আজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনাও এর ব্যতিক্রম নয়। একসময় ভূমিসেবা বলতে বুঝানো হতো দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কাগজপত্র যাচাই, দালালের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করা এবং সাধারণ নাগরিকের জন্য দুরূহ প্রক্রিয়া। কালের বির্বতনে ভূমিসেবা এখন ডিজিটাইজড হয়ে গেছে, জনগণের ভোগান্তী সময় ও অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে।
সিনিয়র সচিব আরো বলেন; মানোন্নীত অটোমেটেড ভূমিসেবা শুধু প্রযুক্তিগত স্বয়ংক্রিয়তা নয়, বরং সেবার গুণগত মানের উন্নয়নও। এখন কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, সেবা প্রদানে সময় কমেছে এবং দুর্নীতির সুযোগ অনেক কমে এসেছে। প্রতিটি ধাপে ডিজিটাল ট্র্যাকিং থাকায় নাগরিক জানতে পারেন তার আবেদন কোথায় আছে ও কে তা প্রক্রিয়া করছে। এর ফলে ভূমি প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সামনে ভোট আসছে, ভোটে প্রশাসনের একটি মূখ্য ভূমিকা থাকে। ভোটের আগে জরুরী কাজ গুলো যতদুর সম্ভব শেষ করে রাখতে হবে। জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করাই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কিন্তু এই প্রক্রিয়া তখনই কার্যকর হয়, যখন নির্বাচন হয় অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছভাবে। আর এই সুষ্ঠ নির্বাচনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব পালন করে প্রশাসন। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বই নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করে বলেন উল্লেখ করেন; সিনিয়র সচিব সালেহ আহমেদ।
প্রশিক্ষানার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন; যথাযথভাবে মনোযোগ সহকারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আপনাদেরই আবার মাঠ পর্যায়ে গিয়ে প্রশিক্ষন দিতে হবে। সময়ের চাহিদার সাথে সাথে নিজেদের আপগ্রেড করতে হয়, ডিজিটাল যুগে নিজেকে আপগ্রেড না করতে পারলে পিছিয়ে থাকতে হবে। ডিজিটাল ভূমিসেবার মূল লক্ষ্য হলো জনগণকে সহজ, সাশ্রয়ী ও স্বচ্ছ ভূমি সেবা প্রদান। কিন্তু অনেক সাধারণ মানুষ এখনও জানেন না যে, অনলাইনে কীভাবে খতিয়ান তোলা যায়, নামজারি করা যায় বা ভূমি কর প্রদান করা যায়। জনগণ যদি এসব বিষয়ে সচেতন না হয়, তাহলে ডিজিটাল ব্যবস্থার সুফল তারা পাবে না এবং পুরনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকেই যাবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনায় ছিলেন মো: পারভেজ হাসান, বিপিএএ, প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব), ভুমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমিমন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: এমদাদুল হক চৌধুরী।