ভোলায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে শয্যা সংকট
সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর দিনে গরম রাতে শীত অনুভূত হওয়ায় উপকূলীয় জেলা ভোলায় বেড়েছে শিশুদের নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডা জনিত রোগের প্রকোপ।
এতে রোগীদের চাপ বেড়েছে ভোলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও ডাক্তাররা। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন দুই শতাধিক রোগী, যাদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত দেড় শতাধিক।
হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট, এতে বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা নিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে,
বেডগুলোতে গড়ে দুই থেকে তিনজন করে রোগী অন্যদিকে মেঝেতে তিল ধরনের ঠাঁই নেই। শিশু ওয়ার্ড চত্বর, সিঁড়ি ও লিফটসহ পুরো চত্বর জুড়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। যেখানে ফাঁকা পাচ্ছেন সেখানেই বিছানা পেতে সেবা নিচ্ছেন। তবে রোগীদের অভিযোগ,
বেড না থাকায় এভাবে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। এর মধ্যে আবার প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স নেই। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন সালমা, রেহানা ও কবির হোসেনসহ একাধিক অভিভাবক জানান,
হঠাৎ করেই রোগের প্রার্দুভাব বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের নিয়ে টেনশনে তারা। রোগীকে চিকিৎসা করাতে এসে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেডে তো জায়গা হচ্ছেই না, মেঝেতেও গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
জানা গেছে, শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে গড়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিন থেকে চারজন রোগী। গত এক সপ্তাহে পুরো জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ শতাধিক। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। চিকিৎসকরা বলছেন,
সংক্রমণ রোধে অভিভাবকদের আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। ভোলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তায়েবুর রহমার জানান, টানা বৃষ্টি,
দিনের গরম এবং রাতে ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় আবহাওয়া যে পরিবর্তন সে কারণে ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তবে রোগীর চাপ বেশি থাকলেও আমরা প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভোলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানিয়েছে,
গত এক মাসে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজারের অধিক। এক সপ্তাহে আক্রান্ত ৪০০ জন। মৃত্যু হয়েছে একজনের।
তিনি আরও জানান, ভোলার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শনিবার পর্যন্ত ২২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল, যাদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১৭৫ জন। এ হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের অর্ধশতাধিক পদ শূন্য থাকায় রোগী সামাল দেওয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্টদের। তবে, আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ অবস্থার উন্নতি হবে।