ভোলায় ল্যাম্পি স্কিন আতঙ্কে খামারীরা, এক সপ্তাহে ১৯টি গরুর মৃত্যু
সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃভোলায় ব্যাপক হারে গবাদিপশু ছড়িয়ে পড়েছে ল্যাম্পি স্কিন রোগ। হঠাৎ করেই এ রোগের প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন খামারি ও গরুর মালিকরা।
খামারিদের অভিযোগ, লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২৪৮টি গরু। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ১৯টি গরুর। কিন্তু মাঠপর্যায়ে নজরদারি নেই জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাদের। তবে সংক্রমণ রোধে উঠানবৈঠক, চিকিৎসাসেবা ও জনসচেতনতা বাড়াতে কার্যক্রম চলছে বলে জানায় জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। জানা গেছে,
উপকূলীয় জেলা ভোলার গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র বেশিরভাগ মানুষের পেশা গাভী পালন। এ পেশাই জড়িত মানুষরা এসব গাভী থেকে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু গত এক মাস ধরে হঠাৎ করেই গরু ও বাছুরের ল্যাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। মশা ও মাছিবাহিত ভাইরাস এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গরুর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। আর তাই আতঙ্কিত খামারি ও গরুর মালিকরা। তাদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ায় আক্রান্ত গরু নিয়ে ভীষণ চিন্তিত তারা।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের খামারি মিজানুর রহমান বলেন, আমার খামারে ৭৭টি গরু ছিল, এর মধ্যে গত তিন সপ্তাহে ১৪টি গরু মারা যায়। এতে আমার কমপক্ষে ২১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন খামারির আরও পাঁচটিসহ ১৯টি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
ইলিশা এলাকার খামারি মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার খামারে ৩৫টি গরু আছে। এর মধ্যে ১০টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ৯টি সুস্থ হলেও একটি বেশি আক্রান্ত। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আলীনগর গ্রামের পারিবারিক খামারি সুভাষ সিং বলেন, আমার ৪টা মধ্যে ২টা গরু আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। আমরা সবাই দুশ্চিন্তায় আছি।
একই অবস্থা কানাই বেপারি, জয়দেব ও বাসন্তী রানির। গড়ে তাদের দুই-একটি করে গরু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে রোগের প্রার্দুভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর। মাঠপর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সংক্রমণরোধে করণীয় বিষয় সম্পর্কে সচেতন করছেন মানুষকে। তবু যেন কমছে না রোগের প্রাদুর্ভাব।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, রোগটি যাতে মহামারী হতে না পারে, সে জন্য ২১টি মেডিক্যাল টিম মনিটরিং করছে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করছে। তবে এখন পর্যন্ত এটি মহামারী আকার ধারণ করেনি।