মরিঙ্গা বা সজনে পাতার উপকারিতা
স্বাস্থ্য টিপ
সুজনে হচ্ছে Moringaceae পরিবারের Moringa গণের একটি বৃক্ষ জাতীয় গাছ। সজনের কাঁটা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। পাতা খাওয়া হয় শাক হিসাবে। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ যা খরা সহিংসু। ডাল ও বিজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয়ে থাকে।সূত্র. বিশ্বকোষ
সজনে পাতার গুনাগুন.
কোলেস্টেরলের লেভেল কমিয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ডায়রিয়া, আমাশা, কলেরাও কোলাইটিস ও জন্ডিসের সময় ব্যাপক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে সজনে পাতা। শরীরের জন্য কাঁচা পাতার রস আরো বেশি উপযোগ। এছাড়া শত বছর ধরে প্রায় ৩০০ এরও বেশি রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সজনে পাতা।
সজিনার পুষ্টি ও ব্যবহার.
সজিনা একটি অতি পরিচিত দামি ও সুস্বাদু সবজি। এর উৎপত্তিস্থল পাক ভারত উপমহাদেশে হলেও এ কাজ শীতপ্রধান দেশ ব্যতীত সারা পৃথিবীতেই জন্মে।
আমাদের দেশে দুই তিন প্রকার সুবিধা পাওয়া যায় বসতবাড়ির জন্য সজিনা একটি আদর্শ সবজি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন সজিনার পাতার পুষ্টিগুণের আধার। নিরামিষ ভোগীরা,স্বাধীনতার পাতা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে একই ওজনের সতিনা পাতায় কমলালেবুর ৭ গুন ভিটামিন-সি, দুধের ৪ গুন ক্যালসিয়াম এবং ৩ গুন আমিষ, গাজরের চার গুণ ভিটামিন এ, কলার তিনগুণ পটাশিয়াম বিদ্যমান।
এছাড়া পাতায় ৪২ শতাংশ আমিষ ১২৫% ক্যালসিয়াম ৬১% পটাশিয়াম ৪১% পটাশিয়াম ৭১% লৌহ এবং ২৭২ পার্সেন্ট ভিটামিন সি সহ দেহের আবশ্যকীয় বহু পুষ্টি উপাদান থাকে।
এছাড়া এক টেবিল চামচ শুকনা সজিনা পাতার গুড়া থেকে এক- দুই বছর বয়সী শিশুদের অত্যাবশ্যকীয় ১৪ পার্সেন্ট আমিষ ৪০% ক্যালসিয়াম ২৩ শতাংশ লৌহ ও ভিটামিন- এ সরবরাহ হয়ে থাকে। প্রতিদিন ৬ চা চামচ সজিনা পাতার গুড়া একটি গর্ভবতী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম এই সজিনা পাতা।
সজিনার ঔষধি গুনাগুন.
ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে সজিনা গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। আধুনিক বিজ্ঞানও এধারণাকে সমর্থন করে। সজিনার কচির পাতা সবজি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সজিনার বাকল,শিকড়, ফুল, ফল,পাতাতেও ঔষধি গুনাগুন রয়েছে।
১.শরীর ব্যথা. শরীরের কোন স্থানে ব্যাথা হলে বা ফুলে গেলে সজিনার শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যাথা ও ফোলা সেরে যায়।
২.কান ব্যথা. সজিনার শিকড়ের রস কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
৩.মাথা ব্যথা. সজিনার আঠা দুধের সাথে খেলে মাথাব্যথা সেরে যায় আঠা কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যাথা সেরে যায়।
৪.ফোড়া সারায়. সজিনার আঠার প্রলেপ দিলে ফোঁড়া সেরে দেয়।
৫.মূত্র পাথরি ও হাঁপানি. সজিনা ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্র পাথরই দূর হয়। এবং ফুলের রস হাঁপানি রোগের বিশেষ উপকার।
৬.গ্যাস থেকে রক্ষা. সজিনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে দুধর সাথে খেতে দিলে বাচ্চাদের পেটে জমা গ্যাস দূর হয়।
৭.কুকুরের কামড়. পাতা পেষন করে তাতে রসুন, হলুদ, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে সেবন করলে কুকুরের বিষ ধ্বংস হয়।
৮.জ্বর ও সর্দি. পাতার স্বাদ খেলে যন্ত্রণাদায়ক জর ও সর্দি দূর হয়।
৯.বহুমূত্র রোগ. সজিনা পাতার রসে বহুমূত্র রোগ সারে।
১০.কোষ্ঠকাঠিন্য ও দৃষ্টি শক্তি. সজিনার ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য দোষ দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
১১.সজিনার ফুল দুধের সাথে রান্না করে নিয়মিত খেলে কামশক্তি বৃদ্ধি ঘটে ।এর চাটনি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
১২.সেমিনার ফল নিয়মিত রান্না করে খেলে কেটে বাদ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
১৩.সদিনার কচি ফল কৃমিনাশক, লিভার ও পিলিহাদোষ নিবারক, প্যারালাইসিস রোগে হিতকর।
১৪.সজিনা বীজের তেল মালিশ করলে বিভিন্ন বাঁত বেদনা অবসতা, ছায়াটিকা,বোদহিনতা, চর্মরোগ দূর করে।
১৫.পাতার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় ও রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়।
১৬.পোকার কামড়ের অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে সজিনার রস ব্যবহার করা হয়।
১৭.ক্ষতস্থান সারার জন্য সজিনা পাতার পেস্ট উপযোগ।
১৮.শ্বাসকষ্ট,মাথাধরা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস ও চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় ও সজিনা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
সূত্র.কৃষিতথ্য সার্ভিস (এআইএস)