জিয়াউর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার
ঝিনাইদহের মহেশপুরে RAB এর অভিযানে মালয়েশিয়া ফেরৎ প্রবাসী যুবকের উপর আমাননিক ও লোমহর্ষক নির্যাতনকারী মুল হোতা গোলাম হোসেন (৪২) এবং লুৎফর রহমান (৪২) গ্রেপ্তার হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায়।RAB
জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে বকুল জীবিকার তাগিদে স্ত্রী লতিফা খাতুনকে বাড়িতে রেখে মালয়েশিয়া যায়। প্রায় ৭-৮ বছর বিদেশে কর্মরত থেকে তার অর্জিত ২০/২৫ লাখ টাকা স্ত্রী লতিফা খাতুনের একাউন্টে প্রেরণ করেন। প্রবাসী স্বামী বকুল দেশে ফিরে আসার কথা শুনে স্ত্রী লতিফা তাকে ডিভোর্স দিয়ে পরকীয়া প্রেমিক খালাতো ভাইকে বিয়ে করে। বকুল দেশে ফিরে স্ত্রীকে না পেয়ে তার পাঠানো টাকা শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের নিকট ফেরৎ চায়। এ বিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসলেও এ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি।
পরবর্তীতে গত (১৪ অক্টোবর-২২) তারিখ বিকালে স্ত্রী লতিফা ও তার পরিবারের সদস্যরা বকুল (৩০) কে কৌশলে তাদের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে আনে।এরপর বকুলকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে আসামীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে। আসামীরা হত্যার উদ্দেশ্যে বকুলকে পিটিয়ে তার হাত পা ভেঙ্গে দেয় ও একটি চোখ নষ্ট করে দেয়। আসামীদের নির্যাতনের ফলে বকুল জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ সময় স্থানীয় লোকজন বকুলকে গুরুতর ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বকুল বর্তমানে মারাত্বক অসূস্থ অবস্থায় একটি হাসপাতালে ভর্তি আছে।
এ ঘটনায় বকুলের ভাই বাদি হয়ে মহেশপুর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার পর থেকে র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি দল আসামীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পের একটি দল গোপন তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত হত্যা চেষ্টার মামলার আসামীরা ঝিনাইদহ সদর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় শহরের মুজিব চত্ত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে উক্ত হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গোলাম হোসেন এবং লুৎফর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।