মৌসুমের শুরুতেই রংপুরের বাজার সয়লাব হয়ে গেছে হাঁড়িভাঙ্গা আম
মাটি মামুন রংপুর।
মৌসুমের শুরুতেই রংপুরের বাজার সয়লাব হয়ে গেছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। এই বিভাগের আশেপাশের জেলা ও উপজেলাগুলোতে এখন হরহামেশাই মিলছে সুমিষ্ট আশবিহীন এই আমটি।গত মাসের ১০ জুন থেকে বাজারে আসা এই আম এখন জেলার সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে (পাকা) ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে।রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৩ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সব
জাতের আমের আবাদ হয়েছে।এর মধ্যে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টরে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ২৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারে এই হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা আয় করতে পারবেন বাগানিরা।মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে রংপুর নগরীর লালবাগ রেলগেট এলাকা, শাপলা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, মর্ডান মোড়, সাত মাথা, মেডিকেল মোড়,বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়,বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকার আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সুমিষ্ট এই আম বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে।কেউবা আবার ক্যারেটে করে ২০ কেজি ৪০ কেজি করে দূর জেলায় প্রিয়জনদের কাছে পাঠাতে কিনছেন হাঁড়িভাঙ্গা আম।আমের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে রঙ ও আকার ভেদে ৪৫-৫০ টাকা। আর পাকা আম ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।আমের দাম মৌসুমের শুরুতে চড়া থাকার বিষয়ে এই
ব্যবসায়ী বলেন, গত ১০ জুন থেকে বাজারে আসতে শুরু করেছে এই আমটি।কিন্তু অনাবৃষ্টির পর গত দুই দিন থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে বাগানিরা এখন আম ছিঁড়তে গড়ি-মশি করছেন। ফলে শুরুতে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বাড়তি থাকছে।তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া গরম থাকলে এবার আমের দাম বড় ব্যবধানে বাড়বে না কারণ হিসেবে এই
ব্যবসায়ীর অভিমত- লাগাতার গরম আবহাওয়া থাকলে বাগানে আমগুলো দ্রুত পেকে যাবে।
ফলে দ্রুত বিক্রি করার প্রবণতা বাড়বে আম চাষি ও বাগানিদের। আর বৃষ্টির আবহাওয়া থাকলে বাগানিরা গাছ থেকে আম নামাতে চান না। ফলে চড়া দামেও আম ছিড়তে চান না বাগানিরা।এদিকে, হাড়িভাঙ্গা আমের গোড়াপত্তনকারী নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ উদ্দিন পাইকার জানান, আমারও কয়েকটি আমবাগান আছে। এবার
আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টির কারণে আমের সাইজ একটু ছোট।
গত ১০ জুন থেকে বাজারে উঠতে শুরু করেছে এই হাঁড়িভাঙ্গা আম।দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা আমাদের বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০টাকা কেজি দরে। আশা করছি আমের দাম বাড়বে।
মিঠাপুকুরের বাগানগুলো থেকে সবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আম পাড়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, অনাবৃষ্টি হলেও এবার হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।প্রতিবছর জেলায় হাড়িভাঙ্গা আম চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে বাড়ি-৪
আমের চাষও। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা আয় সম্ভাবনা আছে বাগান মালিকদের।