রংপুরের গঙ্গাচড়া তিস্তা সেতু সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধস,ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন
মাটি মামুন রংপুর।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কের কয়েটি স্থান ধসে গেছে।এতেকরে রংপুর-লালমনিরহাট সংযোগ কাকিনা অভিমুখী সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন ও পথচারীরা।
স্থানীয়দের দাবি,একদিনের বৃষ্টি ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ধসে গেছে সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক। এর ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। তারা নিম্মমানের কাজ ও তদারকির অভাবকেই দাবি করেছেন।
এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রংপুর-লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থল মহিপুর ও কাকিনা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত তিস্তা সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকে সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি সেতুটি সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এরপর লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর,পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, তুষভান্ডার, কালীগঞ্জ, কাকিনা থেকে প্রতিদিন পাথর বোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনে ভারি যানবাহন চলাচল শুরু করে।
এসব ভারি যানবাহন চলাচলের ফলে রংপুর-মহিপুর তিস্তা সেতু অভিমুখী সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটলসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সড়কটির বিভিন্ন অংশ ধসে যায়। এ নিয়ে ২৫ মে রংপুর-গঙ্গাচড়া সড়ক দ্রুত সংস্কারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠান রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর ফলে গত ২৫ মে রোববার রাত থেকে আবারও ভারি যনবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে গত ২৯ মে পাটগ্রাম ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতি ট্রাক চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে। ফলে কালীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম শর্তসাপেক্ষে রাত ১০টা থেকে সকাল ১০ টা পযন্ত দশ চাকার ড্রাম গাড়ি ছাড়া সকল যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয় ট্রাক মালিক সমিতিকে। কিন্ত প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে তারা নির্বিঘে চালাচ্ছে দশ চাকার ড্রাম গাড়ি ।
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসন বড় বড় পাথরের গাড়িগুলা চলাচলা বন্ধ করিল ভালো কথা। আবারও কেনে খুলি দেইল। এই গাড়ি গুলা খুলি দিয়া যে আবার দুর্ঘটনা ঘটেচোল। কালকের রাইতে পাথর ভর্তি একটা ট্রাক সেতুর মোকাত এমন ভাবে ফাসি গেইছে ভাগ্যভালো উল্টি যায় নাই। কয়েক দিন আগেও দুইটা ট্রাক উল্টে যায় এতে করে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এখন তো হামার গুলারে ভয় লাগে সড়কের বগলত বাড়ি কখন যে গাড়ি উল্টি বাড়িত ঢুকে। এই ভয়ে এখন রাইতের বেলা নিন্দে ধরে না। এখন তো মনে হয়েছিল সেতু টা হওয়া ভুলে হইছে ।
তামজিদ হোসেন, লাভলু মিয়া ও রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন জানান, গত তিন মাসে ছোট বড় প্রায় ১২ থেকে ১৫ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা বলছেন, সড়কটি এবং সেতুর সংযোগস্থল যদি দ্রুত সংস্কার করা না হয় তাহলে হয়তো প্রতিদিন এই ধরনের দুর্ঘটনা আরো বাড়তে থাকবে।
এব্যাপারে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদীর সাথে কথা হলে তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে শুনলাম এই সড়কে নাকি ভারি যান চলাচল বন্ধ করেছে কিন্তু সন্ধ্যা হলে নির্বিঘে দশ চাকার ড্রাম গাড়ি সহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এর ফলে সড়কে ফাটলসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ধসে গেছে শেখ হাসিনা সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক। দ্রুত এই পরিস্থিতি উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহির ইমাম জানিয়েছেন, মোটর মালিক সমিতির লোকজনকে দশ চাকার ড্রাম গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়নি। শর্ত সাপক্ষে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এরপরও যদি তারা দশ চাকার ড্রাম গাড়ি চালায় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী জানিয়েছেন, গঙ্গাচড়ার তিস্তা শেখ হাসিনা সেতু সড়কটি সংস্কারের বিষয় চেষ্টা চলছে। দ্রুতই কাজ করা হবে।