শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, নদীতে নামার প্রস্তুতি ভোলার জেলেদের
সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে দীর্ঘ দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে হচ্ছে ৩০ এপ্রিল। আর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারও নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভোলার জেলেরা।
মাছ শিকারের জাল, নৌকা ও ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কাংখিত মাছ শিকারে ধার-দেনা পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ সারছেন জাল, আবার কেউ নৌকা। কেউ বা ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত। তিন দিন পরই নদীতে নামবেন জেলেরা। বসে থাকার যেন সময় নেই তাদের।
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জেলে ফারুক মাঝি ও ছালাউদ্দিন মাঝি জানান, দীর্ঘ দুমাস নদীতে অভিযান ছিল। তাই নদীতে যেতে পারেননি। ৩০ এপ্রিল রাত ১২টার পর নদীতে নামবেন। এর জন্য মাছ ধরার সব সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন তারা।
শিবপুর ইউনিয়নের জেলে তাইজুল মাঝি ও ধনিয়া ইউনিয়নের নাগর মাঝি জানান, দুমাস মাছ ধরতে পারিনি। এ সময় আমাদের আয়ও বন্ধ ছিল। এতদিন মুদি দোকানের বাকি ও স্থানীয়দের কাছ থেকে ধার-দেনা করে
সংসার চালিয়েছি। রোববার রাত ১২ টার পর নদীতে গিয়ে আশা করছি ইলিশসহ সব ধরণের বড় বড় মাছ পাবো। মাছ বিক্রি করে ধার-দেনা পরিশোধ করবো এবং আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আছে।
ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের ব্যবসায়ী মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ এপ্রিল। তাই আমরা আগে ভাগেই মাছের আড়ত খুলে পরিষ্কার করে রাখছি।
এ দুমাস আমাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় অনেক লোকসান হয়েছে। আমরা আশা করছি জেলেরা নিষেধাজ্ঞার পরে নদীতে গিয়ে বেশি মাছ শিকার করবে। এতে আমাদের ব্যবসাও জমজমাট হবে। আর বিগত দুমাসের লোকসান পুষিয়ে উঠতে পারবো।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা উৎসাহ নিয়ে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে নামবে। নিয়ম মেনে জেলেরা তাদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ শিকার
করতে পারবে। এতে তাদের দুমাসের লোকসান পুষিয়ে উঠবে। ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভোলার ইলিশা থেকে চর পিয়াল ৯০ কিলোমিটার মেঘনা নদী ও ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম ১০০ কিলোমিটার তেঁতুলিয়া নদীতে
সব ধরনের মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ সময় ভোলার সাত উপজেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার জেলের মধ্যে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত চাল পান ৮৯ হাজার ৪১০ জন।