সৌদি প্রবাসে বাংলাদেশীর মৃত্যু পরিবারের দাবি হত্যা
,মোহাম্মদ এরশাদ বাঁশখালী (চট্টগ্রাম):
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কালীপুরের হেলাল উদ্দিন নামে এক সৌদি প্রবাসী নিহতের ঘটনা ঘটে, তার পরিবারের দাবি পরিকল্পিত ভাবে হেলালকে হত্যা করেছে দোকান মালিক মিজানের আপন ভাই কুমিল্লার আল আমিন। আসামী আল আমিন সৌদি পুলিশে আটক রয়েছে বলে নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে।
ঘটনাটি গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় ৬ টার দিকে সৌদি রাজধানী রিয়াদের মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
সৌদি পুলিশে আটককৃত আসামীঃ মোঃ আল আমিন বাংলাদেশের কুমিল্লা, লাকসামের মননগঞ্জের ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত্যু নুরুল ইসলামের পুত্র।অপরদিকে নিহত মোঃ হেলাল উদ্দিন (২৮) উপজেলার কালীপুরের ৭ নং ওয়ার্ডের বগুয়ান পাড়ার মৃত্যু ইসহাক মিয়ার ছেলে।
মোঃ দেলোয়ারবেলাল উদ্দিন, কায়সার ও মোঃ হেলাল উদ্দিনসহ ৪ ভাই এবং বিলকিস ও পারভীনসহ ২ বোনসহ ৬ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট নিহত হেলাল। এছাড়াও নিহত হেলাল উদ্দিন ১ ছেলে ও ১ মেয়েসহ ২ সন্তানের বাবা, মেয়ে বয়স ৪ বছর আর ছেলের বয়স মাত্র ৪০ দিন। স্ত্রী মাহিয়া আক্তার তার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে বার বার মূর্ছা যাচ্ছে।
নিহতের ভাই মোঃ কায়ছার বলেন,গত ২ আগস্ট ২৩ ইং সৌদি প্রবাসে যান ভাই হেলাল, বিদেশ যাওয়ার মাত্র ১ মাস ৮ দিনের মাথায় আমাদের কাছে তাঁর মৃত্যুর খবর আসলো। কায়সার আরো বলেন,ধারকর্জ করে স্থানীয় মাহমুদুর রহমানের কাছ থেকে সৌদি আরবের ভিসা নিয়েছি,মাহমুদুর কথা মতে আজগর নামে একজনকে ওই ভিসার টাকাও পরিশোধ করেছি,কিন্তু হেলালকে সৌদি রাজধানী রিয়াদের মাইল এলাকায় কুমিল্লার মিজান নামে এক বাংলাদেশীর দোকানে শ্রমিক হিসেবে নিহত হেলালকে কাজ দেন। ওই দোকান মালিক মিজানের আপন ভাই আসামী আল আমিন ও হেলাল নামে আরো দুই ভাই সেখানে থাকতো, আসামী আল আমিনের সাথে তার ভাই দোকান মালিক মিজানের মধ্যে চরম বিরোধ ছিলো।
এরই মধ্যে নিহত হেলাল উদ্দিন ওই দোকানে শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার পর ওই দোকান থেকে দেশে সফরে আসেন মালিক মিজানের ছোট ভাই হেলাল।এর পর থেকে মিজান এবং তার ভাই ঘাতক আল আমিনের মধ্যে চলমান বিরোধ দিনেরপর দিন বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বাঁশখালীর হেলাল উদ্দিনকে ওই দোকানের চাকরি ছেড়ে দিতে বলে আসামী আল আমিন, চাকরি ছেড়ে না দিলে তাকেও প্রাণে মারার হুমকিও প্রদান করেছিল আসামী আল আমিন।পরে বিষয়টি ভিসাদাতা মাহমুদুর রহমানকে অবহিত করেন হেলাল। কিন্তু ভিসাদাতা মাহমদু ও আজগর তার কোন কথাই শুনতে রাজি হননি।এমনকি বেশি বাড়াবাড়ি করলে দেশে পাঠিয়ে দিবে মর্মে হেলালকে উল্টো হুমকি দিয়েছিল ভিসাদাতা।
একপর্যায়ে এই বিষয়ে নিহত হেলাল তার ভাই কায়সার এবং স্ত্রী মাহিয়াকে অবহিত করেছিল।নিহত হেলাল উদ্দিনের পরিবারের কাছে ঘটনার পূর্বে হেলালের পাঠানো একটি অডিও রেকর্ডও রয়েছে।অবশেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর হেলাল উদ্দিনের মৃত্যুর শোকে মাতাম চলছে তার পরিবারে।
বর্তমানে নিহত হেলাল উদ্দিনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার কোন সামর্থ্য নেই তার এই অসহায় পরিবারের।তার ছোট্ট শিশু খুবই অসুস্থ, স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় মেডিকেল চিকিৎসাধীন আছে ওই শিশু।
তাই তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন নিহতের পরিবার। আসামী আল আমিনের ফাঁসির দাবিও করেন নিহত হেলাল উদ্দিনের পরিবার ও স্বজনরা।
উল্লেখ্য,ঘাতক আল আমিন ও ভিসাদাতা মাহমুদুর হুমকির কয়েকদিন যেতে না যেতেই ভিসাদাতা মাহমুদুরযোগসাজশে বাঁশখালীর হেলাল উদ্দিনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে ঘাতক আল আমিন।এমন দাবি করেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।