রিপন মারমা,কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি:
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শেখ সাদিকুর রহমান নামের এক ছাত্রকে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পাঁচদিন পর সোমবার সকালে তার বড় ভাই মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে কাপ্তাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় এই মামলা করা হয়েছে।
মামলা বাদী মাহবুব গণমাধ্যম’কে বলেন, পরিকল্পিতভাবে হোক, আর ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় হোক-এটি একটি হত্যাকাণ্ড। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কোনো অবস্থায় এ ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই পলিটেকনিকটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ৫৫ ব্যাচের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র শেখ সাদিকুর রহমান ছাত্রাবাসের দোতলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন।পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তিনদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ১৯ জুলাই তার মৃত্যু হয়। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে জাহাঙ্গীর ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলার ৫৬ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহ পাগলা উপজেলায়।
মামলার এজাহারে মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, মৃত্যুর আগেও একাধিকবার র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাদিকুর। একবার জোরপূর্বক কক্ষে ঢুকে তার চুল ও দাড়ি ফেলে দিয়েছিলেন কয়েকজন ছাত্র। ছাদ থেকে পড়ে সাদিকুরের মৃত্যু হয়েছে দাবি করা হলেও তার বাঁ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখমের দাগ ছিল। এ ছাড়া তার দুই পায়ের নখ ও মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার ধারণা—সাদিকুরকে ছাত্রাবাসের সানশেড থেকে ফেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে চুল-দাড়ি কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থী খুনে জড়িত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার দিন বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে সাদিকুরের সঙ্গে ভিডিও কলে তার মায়ের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় সাদিকুরের মাথার চুল এবড়োখেবড়ো করে কাটা ছিল। বিষয়টি নিয়ে তার মা প্রশ্ন করলে সাদিকুর জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন। এর সোয়া এক ঘণ্টা পর ছাত্রাবাসের প্রভোস্ট ফোন দিয়ে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান।