উখিয়ায় ৩ মানব পাচারকারীর সদস্য আটক
মো:আমিন উল্লাহ,বিশেষ প্রতিনিধি:
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী চক্রের ৩ জনকে আটক করেছে র্যাব -১৫। গ্রেফতারকৃত মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা হলেন, রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদের ছেলে মোঃ ছাবের (২৫) কেফায়েত উল্লাহ
আরাফা (৩৭) গয়ালমারা এলাকার মোঃ শারমিন (২৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন, র্যাব -১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিনিয়র সহকারী পরিচালক ল এন্ড মিডিয়া মোঃ আবু সালাম চৌধুরী।তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া থ হোসাইনাবাদ এলাকার মোঃ বেলাল র্যাব-১৫,
কক্সবাজার এর নিকট অভিযোগ দায়ের করেন যে, তার ছোট ভাই মোঃ হেলাল (৪১) মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে পাচারের শিকার হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম হেলাল পেশায় একজন কৃষক। সে পানের বরজে কাজ করার সুবাদে পেকুয়া ও চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গমনাগমন করতো এবং মানব পাচার চক্রের সাথে পরিচয় হয়ে উঠে।
একপর্যায়ে মানবপাচারকারী চক্রটি মোঃ হেলাল ও পেকুয়ার আরও ৪ জন ভিকটিমকে পাসপোর্ট এবং ভিসার ঝামেলা ছাড়াই উচ্চ বেতন ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য মালয়েশিয়া চাকুরীর প্রস্তাব এবং সেখানে যাওয়ার পর টাকা পরিশোধের প্রলোভন দেখায়। ফলে তারা প্রলোভনে প্রলুদ্ধ হয়ে গত ০৮ অক্টোবর ভোর বেলা বাড়ী থেকে বের এবং মানবপাচারকারীরা তাদের অজ্ঞাত স্থানে যায়।
পরদিন অর্থ্যাৎ ০৯অক্টোবর উখিয়া থানা এলাকা সংলগ্ন সমুদ্রপথে নৌকাযোগে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাচার করে দেয়। ভিকটিমরা সমুদ্রপথের দুর্গম যাত্রায় কাতর হয়ে পরে এবং মালয়েশিয়া না গিয়ে দেশে ফিরে আসার জন্য কাকুতি-মিনতি করলে পথিমধ্যে মানবপাচার চক্রটি মায়ানমারের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য জনপ্রতি দুইলক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে প্রত্যেক ভিকটিমের বাড়ীতে ফোন করে।
মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে ভিকটিমদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিসহ তাদেরকে মারধর করার ভিডিও ইমো’তে পরিবারের নিকট প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার র্যাবের স্মরণাপন্ন হয়। এ বিষয়ে র্যাব-১৫, কক্সবাজার অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২২ অক্টোবর রাতভর র্যাব-১৫, সিপিসি-২ হোয়াইক্যং ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানবপাচার চক্রের তিনজন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরাসহ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে মোঃ হেলাল ও পেকুয়ার আরও ০৪ জন ভিকটিমকে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে চক্রের অপর সদস্যদের হেফাজতে মায়ানমারে আটক করে রেখেছে। তারা সংঘবদ্ধভাবে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিমদের চাকুরী ও মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মিয়ানমারে আটক করতঃ মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল বলে জানা যায়।
মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ক উখিয়া থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে।