কুয়াকাটায় শেষ হলো দুইদিন ব্যাপী “মুজিব’স বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পর্যটন উন্নয়নে অংশীজনদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারের মধ্যদিয়ে শেষ হলো “মুজিব’স বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল কুয়াকাটা” দুইদিন ব্যাপী উৎসব। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে শনিবার সকালে হোটেল গ্রেভার ইন হল রুমে অংশীজনদের নিয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মোঃ রাহাত আনোয়ার।বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দীন বিপ্লব, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পরিদর্শক আবু সাহাদাৎ মোঃ হাসনাইন পারভেজ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোয়াক সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার।এর আগে শুক্রবার রাতে ।ফানুস উৎসব, রাখাইনদের মনোমুগদ্ধকর নৃত্য এবং পুতুল নাচ, ফুটবল,গুড়ি উৎসবসহ নানা আয়োজন উপভোগ করেন আগত পর্যটক দর্শনার্থীরা।ট্যুরিজম বোর্ড এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে সৈকতের আকাশে শতাধিক ফানুস উড়ানো হয়। এছাড়া সৈকতে অর্ধশতাধিক স্টলের মাধ্যমে বরিশালের আঞ্চলিক উৎপাদিত পন্য ও বাহারী খাবারের পসরা প্রদর্শন করা হয়।
দেশের পর্যটন শিল্পকে লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দুইদিন ব্যাপী এ উৎসবের আয়েজন করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং পর্যটন শিল্পকে দেশ বিদেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এ উৎসব চলবে ধারাবাহিকভাবে।এদিকে অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে যেভাবে প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে সে অনুযায়ী পর্যটক দর্শনার্থীদের মনজয় করতে পারেনি আয়োজকরা।
সন্ধার পরে ছিল না কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগত পর্যটক দর্শনার্থীরা হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন তারা। দ্বিতীয় দিন শুধু মাত্র একটি সেমিনারের মধ্যদিয়ে শেষ হয় কুয়াকাটা উৎসব। সাদামাটা আয়োজনে হতাশ আগতরা। শুক্রবার দুপুরে সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে যে খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে তা গন্ধ হয়ে গেছে। যাদেরকে দেয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই ওই খাবার ফেলে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অনেকেই জানান বাজেট অনুযায়ী খুবই সাদামাটা আয়োজন করা হয়েছে।কুয়াকাটা শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক সাংবাদিক হোসাইন আমির জানান, কুয়াকাটা শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা মঞ্চ প্রোগ্রাম, সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশের মাধ্যমে পর্যটকসহ স্থানীয়দের বিনোদন দিয়ে আসছে। গত বীচ কার্নিভাল অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের প্রধান্য দিয়েছেন।
এবার কুয়াকাটা উৎসবে তাদের ডাকা হয়নি। স্থানীয় আয়োজকের ব্যক্তিগত দন্দের জেরে তাদের এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে তার দাবী।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতা অভিযোগ করেন অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে দাওয়াত দেয়া হয়নি।
দাওয়াতের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা আওয়ামী ঘরনার কেউ নয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন এ উৎসব উপলক্ষে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ফেস্টুনে মুজিব’স বানানে বিকৃত করা হয়েছে। পরে পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইউএনও এবং ট্যুরিজম বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে শুক্রবার রাতে ঐসব ব্যানার ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা হয়।
কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র জানান, ট্যুরিজম বোর্ডের অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। অনুষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে যারা দ্বায়িত্ব পালন করেছে তাদের অনেকেই সরকার বিরোধী আন্দোলনের সাথে সরাসরি জরিত। তারা বেছে বেছে চিঠি দিয়েছে। এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান তাকে এবং তার পৌর পরিষদকে অবমুল্যায়ন করা হয়েছে। তিনি এর জন্য স্থানীয় অনুষ্ঠান সহযোগিদের দ্বায়ী করেছেন।