বৈষম্য বিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ” এর উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
চিফ রিপোর্টার:ঢাকা,২৫/১০/২০২৫.
বৈষম্য বিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ” এর উদ্যেগে আজ সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত ২৫ ক্যাডারের বৈষম্যের শিকার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও সুবিধা প্রদান, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা এবং ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ৭ কলেজের স্বকীয়তা বজায় রেখে শিক্ষার মানোন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ২৫ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংগঠন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বৈষম্য বিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল সংগঠনটির পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এসময় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক ও বিসিএস ইনফরমেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বিসিএস জেনারেল এডুকেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যক্ষ আই কে সেলিমুল্লাহ খন্দকার, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিলউদ্দিন ও অধ্যাপক এম এ সামাদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাক্তন পরিচালক ও অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস লাইভস্টক এসোসিয়েশনের সহসভাপতি ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রাক্তন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের ত্রয়োদশ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার নকীব আহসান, পেটেন্ট অধিদপ্তরের প্রাক্তন কর্মকর্তা প্রকৌশলী এসএম এনামুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের বঞ্চনা লাঘবের জন্য অন্তরবর্তী সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত ও প্রয়াত মিলে প্রায় ৭৭৮জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ বাকি ২৫টি ক্যাডারের বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত মাত্র ৭২জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়। যাচাই বাছাইয়ের নামে প্রকৃতপক্ষে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা কোনো কারণ ছাড়াই বাদ পড়ে যান। অধিকন্তু, অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের ভুতপেক্ষ পদোন্নতির আদেশেও বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
এসময় তারা ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত সকল কর্মকর্তাদের আবেদনগুলো পুনর্বিবেচনা
এবং প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ভুতাপেক্ষ বেতন ভাতাসহ সকল আর্থিক সুবিধা প্রদানের জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশকে আড়াল করে, অত্যন্ত কম গুরুত্বপূর্ণ ও অযৌক্তিক কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই সনদকে দুর্বল করা হয়েছে। এর একটি হল- সিভিল সার্ভিসে নিয়োগের জন্য তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন। [সরকারি কর্মকমিশন (সাধারণ); সরকারি কর্মকমিশন (শিক্ষা) ও সরকারি কর্মকমিশন (স্বাস্থ্য)) এবং অপরটি হলো- হিসাব বিভাগ থেকে নিরীক্ষা বিভাগ আলাদাকরণ। যদি হিসাব বিভাগকে নিরীক্ষা বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়, তবে প্রি-অডিট কার্যক্রম বিলুপ্ত হবে, যা আর্থিক জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করবে।
একটি মেধাভিত্তিক সিভিল সার্ভিস গঠনে উপসচিব পদে কোটা বাতিল করে সকল ক্যাডার থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে অনেকেই। কিন্তু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পর্যায়ের মোট পদের প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০% এবং অবশিষ্ট ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০% ভাগ পদ রাখার সুপারিশ করেছে, যা জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘার্ষিক। জুলাই সনদেও এ বিষয়ের কোন প্রতিফলন দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তারা বলেন, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সীমাহীন কর্তৃত্ব পরায়ণ মনোভাব সিভিল সার্ভিসের অভ্যন্তরে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে এবং একটি গণমুখী, সেবাধর্মী, জনবান্ধব জনপ্রশাসন গড়ে তোলার প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ নিয়ে শিক্ষাখাতে নতুন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। দেশসেরা কলেজগুলো বন্ধ করে অনুমান নির্ভর বা পরীক্ষামূলক কোর্স পরিচালনা সঠিক নয়। তাই, শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণের সুপারিশের আলোকে এবং অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।







