আবু নাসের হুসাইন, ফরিদপুর:
বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে পাঠক প্রিয় হয়ে উঠবে ‘বাঙ্গালী সময়’- এ প্রত্যয় নিয়ে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে ফরিদপুর থেকে বৃহত্তর ফরিদপুরে প্রকাশিত দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকার ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিক লিয়াকত হোসেন মিলনায়তনে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মোল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান (হাবিব)।
এ সময় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান (হাবিব) দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকার ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় পত্রিকা কোনো সাংবাদিকের হাতে নেই। সমস্ত পত্রিকা ও টেলিভিশন শিল্পপতিদের হাতে। একজন সাংবাদিকের মতামত ঐ পত্রিকায় প্রকাশ করার সুযোগ থাকে না। কারন, ঐ শিল্পপতি তার প্রতিনিধিদের সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দিয়ে থাকেন। কিন্তু মফস্বল শহরে আমরা যারা সাংবাদিকতা করি তারা নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার সুযোগ পাই। আর সেটা স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে। একটি স্থানীয় পত্রিকা লালন-পালন করতে যে কত ভাড় বহন করতে হয়, তা শুধু যে প্রকাশ করে সেই জানে। অনেক সময় প্রেসের ছাপা খরচও দিতে পারে না। তবুও পত্রিকা বের করতে হয়। কারন, পত্রিকাটি তার কাছে সন্তানের মতো।’
প্রবীণ সাংবাদিক প্রফেসর মো. শাহজাহান হোসেন পত্রিকাটি’র প্রশংসা করে বলেন, ‘পত্রিকাটির সাফল্য ও উত্তরোত্তর কামনা করি এবং পত্রিকাটিতে আরো এক্সক্লুসিভ সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। তাহলে পাঠকের মন জয় করবে।’
সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, ‘একজন সাংবাদিকের লেখনিতে একটি সমাজ, দেশ, জেলা, উপজেলা, শহরকে উন্নত করা যায়। কারন, একমাত্র সাংবাদিকেরাই বের করতে পারে, কে দুর্নীতিবাজ, কে মাদকাসক্ত, কে ঘুষখোর?
তিনি আরো বলেন, ‘এই বাঙ্গালী সময় পত্রিকা আমাদের সালথা উপজেলার বাসিন্দা সেলিম মোল্লার। তিনি তার যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি পত্রিকাটির সাফল্য কামনা করি।
’সাংবাদিক পান্না বালা পত্রিকাটির সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘পত্রিকাটির দৃষ্টিভঙ্গি, অনুসন্ধানী মন, ভেতরের খবর বের করে নিয়ে আসার যে প্রবণতা বাঙ্গালী সময় করে থাকে। পাঠকের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে হবে। পাঠক চায়, কোথায় অনিয়ম, দুর্নীতি হচ্ছে সেটা খুজে বের করা, অসহায় মানুষের কথা তুলে ধরা।’
তিনি পত্রিকাটির মাধ্যমে ফরিদপুরের সংস্কৃতি তুলে ধরারও আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি পত্রিকাটি ভুল-ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
সভাপতিত্বকালে পত্রিকাটি সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সেলিম মোল্লা বলেন, ‘স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশে যে মাঠের প্রয়োজন সে মাঠ বিভিন্ন কারনে আমরা সৃষ্টি করতে পারি না। কারন, স্থানীয় সংবাদপত্র প্রকাশে অনেক চাপ থাকে ও বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারন রয়েছে। বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সেক্টর থেকেও স্থানীয় পত্রিকাকে উৎসাহ দেয়া হয় না। একটা পত্রিকা প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে, তাকে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় না। এসব বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকা পাঠক প্রিয় করে তোলা হবে এবং প্রতিদিন প্রকাশের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক তমিজদ্দিন তাজ, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সমকালের নিজস্ব প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সঞ্জিব দাস, দৈনিক বাঙ্গালী সময়ের ক্রাইম রিপোর্টার আলমাস আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পত্রিকাটির বার্তা সম্পাদক শ্রাবণ হাসান। এ সময় জেলার সকল উপজেলা প্রতিনিধি, জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ ও শুভাকাঙ্খিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকার ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে ৬ পাউন্ডের কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু হয় দৈনিক বাঙ্গালী সময় পত্রিকার। পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সেলিম মোল্লার সাহসী ভূমিকায় এগিয়ে যাচ্ছে পত্রিকাটি। বর্তমানে ফরিদপুর জেলার সকল উপজেলার বাইরেও, গোপালগঞ্জ জেলা, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর, কাশিয়ানি, মাদারীপুর জেলা, শিবচর, রাজৈর, রাজবাড়ী জেলা, গোয়ালন্দ, পাংশা, বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রতিনিধি রয়েছে পত্রিকাটির।