দূর্নীতি দায়গ্রস্ত অধ্যক্ষকে বহালের চেষ্টা! আদালতে মামলা
খন্দকার সাইফুল,নিজস্ব প্রতিবেদক, নড়াইলঃ
দূর্নীতির দায়ে চাকুরী চলে যাবার ভয়ে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষকে ফের পাতানো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগের পায়তারা চলছে। এ ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ রাশেদুল বাশার ডলার কে আসামী করে আদালতে মামলা
করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শেখ শাহ আলমগীর।শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসনের পক্ষে তদন্ত চলাকালে ২০২১ সালের ১২ জুলাই স্বেচ্ছায় চাকুরী হতে অব্যহতির আবেদন করেন দিঘলিয়া নবগঙ্গা ডিগ্রী
কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন মোল্যা। ২০২২ সালের ১ মার্চ এমপিও ভূক্তির ইনডেক্স বাতিল করে শিক্ষা বিভাগ।২০২১ সালে গভর্নিং কমিটিরর মেয়াদ শেষ হলে দূর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন মোল্যা শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অফিসে
যোগাযোগ করে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখ রাশেদুল বাশার কে সভাপতি মনোনীত করে আনেন। ২০২২ সালের মার্চে ডলার কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদেআসীন হবার পর
থেকে মোশারেফ হোসেন মোল্যা কে বহাল করতে তোড়জোড় শুরু করেন।এর বিরোধিতা করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীনেশ চন্দ্র বিশ্বাসকে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দ্বায়িত্ব দেয়া হয় মো.ইলিয়াস সর্দার কে। এরপর অধ্যক্ষ সহ ৪টি পদে নিয়োগের জন্য সভাপতি রাশেদুল বাশার ডলার মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন। এর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইলিয়াস সর্দার এর মাধ্যমে ল্যাব এসিস্টেন্ট পদে
নিয়োগের জন্য ৬ লক্ষ টাকা চুক্তিতে ২ লক্ষ টাকা অগ্রিম গ্রহন করেন।পরবর্তীতে অন্য এক প্রার্থীর কাছে ৮ লক্ষ টাকা চুক্তিতে অধ্যকের প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করেন। গভর্নিং বডিকে গোপন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ করে সভাপতি। অভিযোগ আছে ২৬ এপ্রিল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল নিয়োগে মোটা অংকের লেনদেন হয়ে সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান কে নিয়োগ দেবার পক্রিয়া চুড়ান্ত করা হয়েছে।অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে এলাকার লোকেরা নানা জায়গায়
অভিযোগ করতে থাকে। জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগে নানা ধরনের অভিযোগ করেন তারা। এর প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিস তদন্তে নামে। তদন্তে সাবেক অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন মোল্যার বিরুদ্ধে দূর্নীতির স্পস্ট প্রমান পেয়েছে শিক্ষা বিভাগ।
২০ অক্টোবর জেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদনে সভাপতির সাজানো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।তিনি স্বেচ্ছায় অব্যহতি না নিলে দূর্নীতির দায়েই তার চাকুরী চলে যাবার কথা এমন কথাও বলেছে ঐ প্রতিবেদন।
কলেজের সাবেক সভাপতি মো.আজাদ রহমান বলেন,আমার বাবার প্রতিষ্ঠিত কলেজ অথচ আমি সভাপতি হয়ে দেখি কলেজ তহবিলে মাত্র ৬ হাজার টাকা। সব টাকা দূর্নীতির করে অধ্যক্ষ মোশাররফ তছনছ করেছে। তাকে নিয়োগের জন্য
উঠেপড়ে লাগার অর্থই হলো আর্থিক লেনদেন।কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো.ইলিয়াস সর্দার বলেন,কলেজের নিয়োগের দূর্নীতি চলছে। সভাপতি ডলার আমার কাছ থেকে একজনকে নিয়োগ দেবার কথা বলে ২ লক্ষ টাকা অগ্রিম
নিয়েছেন পরে অন্যের কাছে বেশি টাকা পেয়ে নিয়োগ বাতিল করেছেন এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।সাবেক অধ্যক্ষ ও পুনরায় নিয়োগপ্রত্যাশী মোশারেফ হোসেন মোল্যা বলেন,আমার বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসার যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা প্রভাবিত হয়ে
করেছেন।আমাকে সসন্মানে কলেজ থেকে বিদায় দেয়া হয়েছিলো। বর্তমান সভাপতি টাকা নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি অস্বীকার করলেও অন্য নিয়োগে আর্থিক লেনদের ব্যাপারে তাকে না
জড়ানোর অনুরোধ করেন।কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি রাশেদুল বাশার ডলার কে কয়েক দফা ফোন দেয়া হলে ধরেন নি,একবার ফোন ধরে বলেন, ভাই ঢাকাতে আছি পরে কথা বলছি,এরপর আর ফোন
ধরেন নি।জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সায়েদুর
রহমান বলেন,কলেজে অনেকগুলো বেআইনী কাজ করা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে পুনরায় নিরপেক্ষ বোর্ড গঠন
করা দরকার। পদত্যাগ না করলে তার চাকুরী চলে যাবার কথা। এমপিও সমাপ্তি হবার পরে পুনরায় এ ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন বেআইনী।