৫০ বছরেও হয়নি সেতু ৫ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো
মাটি মামুন রংপুর।
৫০ বছরেও হয়নি সেতু ৫ গ্রামের মানুষের ভরসা সাঁকো লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা ঘুরে এসে জানাচ্ছি মাটি মামুন।গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো।
প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে।অনেক সময় ভাঙা সেতু থেকে পড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের
বইখাতা, পরিধানের পোশাক ভিজিয়ে
নাকানিচুবানি খেয়ে তীরে উঠতে হয়।
এছাড়া এলাকায় রয়েছে বড় দুটি সাপ্তাহিক হাট।
বৃষ্টির দিনে এই ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণকরে।এ অবস্থায় প্রায় ১৫০ মিটার প্রশস্ত সতি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো।
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও হয়নি সেতু। সেতুর
অভাবে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন
ওই ১৫ গ্রামের লাখো মানুষ।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছেন শিশুসহ বৃদ্ধরা।
প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে গিয়ে
দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
৫০ বছরে ধরে লালমনিরহাটের আদিতমারীর সতি নদী পার হয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে
চন্দনপাট, পাবনাপাড়া, বামনেরবাসা,
বেলতলি, বুড়িরদিঘি, কমলাবাড়ি, বড়
কমলাবাড়ি, চরিতাবাড়ি, নিথক, শিয়ালখোওয়া,চাকলারহাটসহ ১৫ গ্রামের লাখো মানুষ।
এছাড়া প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়
বুড়িরদিঘী হাইস্কুল, শিয়াল খোওয়া হাইস্কুল,
একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের।
সেতু না থাকায় কৃষকের উৎপাদিত ফসল কেনাবেচা এবং যে কোনো সময় যাতায়াতের জন্য সাঁকোই একমাত্র ভরসা।
জানা গেছে, আদিতমারীর চন্দনপাঠ গ্রাম থেকে সতি নদী পর্যন্ত কিছু দূর পাকা রাস্তা রয়েছে।সেই রাস্তার সামনে রয়েছে নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি হলেও আজও তা পূরণ হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় এক দশক আগে গ্রামের মধ্যে কিছু রাস্তা পাকা করা
হলেও এখানে একটি সেতুর দাবি অপূর্ণই রয়ে গেছে।সেতুর দাবি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়ে না পেয়ে এলাকাবাসী হতাশ।
আধুনিক যুগে এসেও এখনো ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই হচ্ছে পারাপারের একমাত্র ভরসা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ও চলবলা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে সতি নদী
প্রবাহিত। এখানে সেতুটি হলে ১৫-১৬ গ্রামের
লাখো মানুষের যোগাযোগের পথ সুগম হবে।
পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় শহরে খুব কম
সময়ে পৌঁছানো যাবে।সুবিধা পাবেন এলাকার কৃষকরাও।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আবুল কালাম বলেন, সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারে না।
কয়েকবার সেতুর জন্য মাপ নেওয়া হলেও
বাঁশের সাঁকো।ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল কেউ বা পায়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয়রা প্রতিবছর বাঁশ সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে সাঁকো নির্মাণ পরবর্তীতে আর কোনো কাজের অগ্রগতি হয়নি। এভাবেই দিনে পর দিন বাঁশের সাঁকোর ওপর ভরসা করে চলাচল করতে হয়।ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বলেন, একটি সেতুর অভাবে
আমরা দুই কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে জেলা ও
উপজেলা সদরে প্রবেশ করি।
সেতুটি নির্মাণ হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।সেতু হচ্ছে হচ্ছে বলে ৫০ বছর গেটে গেছে সেতু আর হয় না।এ বিষয়ে কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতি এর সাথে কথা বললে তিনি এই প্রতিবেদক কে বলেন, সতি নদীর ওপর একটি ব্রিজের দাবি দীর্ঘদিনের।
আগের চেয়ারম্যানরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও অগ্রগতি হয়নি।সতি নদীর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে কমলাবাড়ি ও চলবলা এলাকার মানুষের চলাচল পাল্টে যাবে।
তিনি সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী মাইদুল ইসলাম বলেন, সতি নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রীও খুব আন্তরিক। আশা করি, দ্রুতই এলাকাবাসীর দাবি পূরণ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালমনিরহাট জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর কাদের ইসলাম এর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন পর্যায়ক্রমে সব সেতু নির্মাণ করা হবে।এরপর তিনি রংপুরে একটি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন
কেটে দেন।