হরিণাকুণ্ডুতে কাবিখা প্রকল্পে নয় ছয়: শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকু মেশিন ব্যবহার ও মাটি বিক্রির অভিযোগ
সুদিপ্ত সালাম, হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ):
ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নে কোন প্রকার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে কাবিখা প্রকল্পের কাজ।শ্রমিকের পরিবর্তে মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) ব্যবহার ও স্হানীয় ‘মরা গাং’ থেকে মাটি তুলে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্হানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, কাবিখা প্রকল্পের অংশ হিসেবে “রঘুনাথপুর ইউনিয়নের শ্রীফলতোলা গ্রামের ‘রহমানের বাড়ি হতে মন্টু’র বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মাটি দিয়ে সংস্কারের কাজে ৫ মেট্রিকটন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পটিতে শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও ইঞ্জিন চালিত
ভেকু দিয়ে স্হানীয় ‘মরা গাং’ থেকে মাটি কেটে রাস্তা সংস্কারের কাজ করেছেন সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যের স্বামী আব্দুর রশিদ ও ইউপি চেয়ারম্যান বসির উদ্দীন। প্রকল্পটিতে দায়সারা গোছের কাজ করা
হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্হানীয়দের অভিযোগ, মাটি কাটার যন্ত্র ( ভেকু) ব্যবহার করায় কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
স্হানীয় বাসিন্দা রহমান আলী বলেন, দেখলাম গত দুই দিন ধরে শ্রমিকের পরিবর্তে মাটি কাটা ভেকু দিয়ে এই রাস্তার কাজ করছে। অথচ আমরা বেকার বসে আছি। আমাদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে।
মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ চলাকালীন সময়ে স্হানীয় ‘মরা গাং’ থেকে মাটি তুলে তা স্হানীয় আক্কাচ আলী নামের একজনের কাছে বিক্রয় করারও অভিযোগও উঠেছে।
ক্রেতা আক্কাচ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে মাটি ক্রয়ের কথা স্বীকার করে তিনিনবলেন, প্রকল্পে কাজ করার সময় মাটি বিক্রি করবেন বলে সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের স্বামী আঃ রশিদের আমাকে জানান। আমি প্রতি গাড়ি মাটি ১ (এক) হাজার টাকা করে কিনেছি।
এ ঘটনায় সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যের স্বামী আঃ রশিদ বলেন , আমি চেয়ারম্যানের কথা মত কাজ করি। আমি মাটি বিক্রয় করিনি,কিছু মাটি আমি নিয়ে এসেছি নিচু জমি ভরাটের জন্য। এতে আমার জেল-ফাসি হয় হোক।
শ্রমিকের পরিবর্তে মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে রাস্তা সংস্কার, প্রকল্পের মাটি বিক্রয়ের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বসির উদ্দীন বলেন, মাটি বিক্রয় করে কি আমরা কোটিপতি হয়ে গেছি? সাংবাদিকরা আমার
ইউনিয়নে কি? অন্য যায়গায় যান। আমার প্রকল্পের কাজ দেখবে ইউএনও, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। আপনারা আমার ইউনিয়নের কাজ নিয়ে প্রশ্ন করার কে? আপনাদের কিন্তু খবর আছে।
এদিকে হরিণাকুণ্ডু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুর রহমান এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিলে তিনি জানান,আমি কাগজপত্র (ফাইল) না দেখে কিছুই বলতে পারছি না। কথা শেষ হওয়ার আগেই তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন, হতদরিদ্র শ্রমিক বঞ্চিত করে (ভেকু) দিয়ে কাজ করছে কি না আমার তা জানা নেই। কোন অনিয়ম হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।