সৈয়দপুরে মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলের চেষ্টা এবং এতে বাধা দেওয়ায় হামলার অভিযোগ উঠেছে।বঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা।গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে শহরের বাইপাস সড়কের বসুনিয়াপাড়ার নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ঘটনার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ বসুনিয়া। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রইচ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, বিশিষ্টজন আব্দুল হাই বসুনিয়া, মোস্তাকুর রহমান বসুনিয়া, আব্দুল হাই সরকার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুস সামাদ বসুনিয়া বলেন, বিএস রেকর্ডিয় মালিক আবুল হোসেন হাসিবুল্লাহর ওয়ারিশদের কাছ থেকে ২০১২ সালে ৩০৫৭ নম্বর কবলা মূলে জমি কিনে ভোগদখল শুরু করে আসছি। বর্তমানে ব্যবসায়ী জিয়াউল হক বাবু আমার কাছে ভাড়া নিয়ে ওই জমিতে খোয়া মাটির ব্যবসা করছেন। এরপর একই ভূমি মালিকের ওয়ারিশদের কাছ থেকে এ বছর আরো সাড়ে ৯ শতক জমি কবলামূলে ক্রয় করে ওই খোয়া মাটির ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেই।
এমতাবস্থায় শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত আনুমানিক ২০০/৩০০ দস্যু প্রকৃতির ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জায়ায়াত-শিবির ক্যাডার ন সেলিম সরকার, জসিম উদ্দিন, আফজালুল হক বকুল আমার জমি দখলে নিতে অবৈধভাবে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকে। আমি লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের দেখতে পাই। পরে আমি তাদের বাধা প্রদান করলে তারা আমাকে বলে যে, এই জমি আমরা জাকির হোসেনের কাছ থেকে সাফ কবলা মূলে খরিদ করেছি। যার দাগ নং হলো ৩৬১১ ও ৩০৫৭। অথচ আমি জমি কিনেছি ৩৬০৫ ও ৩৬০৭ দাগে বলে তাদের জানাই। আমার এমন কথা শুনে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাকে অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ, মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। এ সময় আমার আর্তচিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ ঘটনাস্থলে আসলে আমি তাদের হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পাই। ঠিক এর আগের দিন ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার একই কায়দায় এসে আমার জমিতে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে আমার ছোট ভাই ফারুক বসুনিয়াকে বেদম মারপিট ও মাথায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। বর্তমানে সে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন সেলিম সরকার, জসিম উদ্দিন, আফজালুল হক বকুল ও জোনাব আলী ওই জমি দখল করার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় আমি নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বছরের ২৬ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করি। এ মামলা দায়েরের আগের দিন ২৫ এপ্রিল তাদের প্রাণনাশের হুমকি থেকে প্রাণে বাঁচতে সৈয়দপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন উলটো তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমতাবস্থায় আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পাকিস্তানীদের হাত থেকে জানমাল রক্ষা করতে ৭১ সালে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। আর স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধার জমি স্বাধীনতা বিরোধীরা দখলের পায়তারা করছে, যা ভাবতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। প্রশাসন যদি এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেন তাহলে মানবন্ধনসহ রাজপথে আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দেন তাঁরা।