সাত নার্সিং প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বন্ধের আদেশ
মাটি মামুন রংপুর:
রংপুরে হঠাৎ গড়ে উঠেছে মানহীন নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৭টি। এগুলোর একাডেমিক ভবন, হোস্টেল, দক্ষ শিক্ষক, অফিস স্টাফ, শিক্ষা উপকরণ, ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের হাসপাতালসহ নার্সিং শিক্ষার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ন্যূনতম ব্যবস্থাও নেই। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষামান এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
সম্প্রতি রংপুরের দুটিসহ সাতটি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠানের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ হতে ভর্তি বন্ধসহ কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল। রংপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান হলো, গ্রীণ পিস নার্সিং ইনস্টিটিউট ও স্মার্ট লিভিং নার্সিং কলেজ ।
বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর মেডিকেল পূর্বগেট পাকার মাথায় অবস্থিত গ্রীণ পিস নার্সিং ইনস্টিটিউটটি ২০২০-২০২১ সালে ৪০টি আসন বরাদ্দ পূর্বক সাময়িক অনুমোদন পায়। কিন্তু বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল গত ১ জুন পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানটির
অনুমোদিত ঠিকানায় একাডেমিক কার্যক্রম পায়নি। এ কারণে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে নির্বাহী কমিটির সভায় গত ১৮ জুলাই গ্রীণ পিস নার্সিং ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ হতে ভর্তি বন্ধসহ কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছে।
অন্যদিকে গত ১৯ জুলাই রংপুরের অপর নার্সিং প্রতিষ্ঠান স্মার্ট লিভিং নার্সিং কলেজকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ হতে ভর্তি বন্ধসহ ৬টি প্রাতিষ্ঠানিক ঘাটতি পূরণের নির্দেশ প্রদান করেছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল। এছাড়া নীলফামারী জেলার নীলফামারী ডায়াবেটিক সমিতি নার্সিং ইনস্টিটিউট, নীলফামারী কমিউনিটি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর প্রফেসর ডা. গোলাম কবীর নার্সিং ইনস্টিটিউট,
রাজবাড়ী জেলার আব্দুল্লাহ নার্সিং ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে এ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি বন্ধসহ মধ্যে ঘাটতিসমূহ পূরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং টাংগাইল জেলার টাংগাইল ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন নার্সিং ইনস্টিটিউটের সাময়িক অনুমোদন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, দেশে-বিদেশে দক্ষ নার্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখাতে সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি চাকরির বাজারও ভালো। ফলে শিক্ষার্থীদের বড় অংশ এখন নার্সিং পড়ছে। তাই সরকারি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকার বেসরকারি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের নীতিমালা করেছে। আর সরকারি সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুবিধাবাদি মহল
ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অবকাঠামো, দক্ষ জনবল, শিক্ষা উপকরণ, ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের জেনারেল হাসপাতালসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই মানহীন নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমোদনও দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে কথা হলে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার রাশিদা আক্তার জানান, দেশের নার্সিং শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনে, উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের রেজিস্ট্রার যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষ নার্সিং কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর এটা বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কঠোর নীতি গ্রহণ করেছি। যেসব নার্সিং প্রতিষ্ঠান নীতিমালা ও শর্ত ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।