বাংলাবান্ধা বন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ, বিপাকে শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
আহসান হাবিব পঞ্চগড়
: দেশের সড়ক পথের একমাত্র চারদেশীয় স্থলবন্দর (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান) পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা দিয়ে গত ২২ দিন ধরে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছে আমদানিকারকরা। এতে করে পহেলা আগস্ট থেকে স্থবির বন্দরের কার্যক্রম।
জানা গেছে, সরকারি ভাবে স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ বিদেশী মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু টন প্রতি ১২ ডলারের পরিবর্তে ১৩ ডলার করায় বন্ধ রয়েছে বোল্ডার পাথর আমদানি। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। স্থলবন্দর ইয়ার্ডসহ পুরো এলাকাজুড়ে নেমেছে স্থবিরতা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
এদিকে বন্দরের কার্যক্রম না হওয়ায় কর্মহীন হয়ে সংকটে পড়েছে বন্দর এলাকার দোকান ব্যবসায়ী, ট্রাক ও অটো চালকেরা। দ্রুত সমস্যা সমাধানে সরকারের সহায়তা কামনা সকলের।
লোকসান সহ আর্থীক সমস্যার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি শুল্ককর প্রত্যাহার না করায় বন্ধ রয়েছে পাথর আমদানি। অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু পূর্বের দাবিতে আমদানি থেকে পিছু হেটেছেন তারা।
ক্ষুদ্র পাথর ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটি। এই বন্দরটির উপর নির্ভরশীল পুরো তেঁতুলিয়া তথা পঞ্চগড় বাসী। কিন্তু গত ২২ দিনে সবাই কর্মহীন অবস্থায় দিন অতিবাহীত করছি।
সুমন ইসলাম নামে আরেক পাথর ব্যবসায়ী বলেন, সরকার যে কর বৃদ্ধি করেছে এতে লোকসানে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। সকলের দাবী পূর্বের ভ্যালু করার।
এদিকে শ্রমিক হাবুবর রহমান হাবলু, খাইরুল ইসলাম বলেন, একমাত্র এ বন্দরের উপর আমরা নির্ভরশীল। এলাকায় অন্য কাজ না থাকায় এ কাজে যুক্ত হয়েছি। কিন্তু বন্দরে আমদানি না হওয়ায় গত ২২ দিন ধরে বেকার সময় কাটাচ্ছি। বন্দরে কাজ করে পরিবার চালায়। কিন্তু বন্দরে একের পর এক সমস্যায় খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আয় রোজগার হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে মানবেতর দিন যাপন করতে হচ্ছে। একই কথা জানান বন্দর এলাকার দোকান ব্যবসায়ী, ট্রাক ও ইজিবাইক চালকেরা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি- রফতানি গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন বলেন, অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়ানোর কারণে আমদানি কারকদের খরচ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। লোকসানে পড়ে তারা আমদানি বন্ধ রেখেছে। এই সমস্যা সমাধানে উদ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা চলছে।
বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভারত ও ভূটানের মাঝে স্লট বুকিং ফি বাবদ চলা দ্বন্দ্বের পর জুলাইয়ের শেষের দিকে ভারত থেকে কিছু সংখ্যাক পাথর আমদানি হলেও আবারো বন্ধ হয়ে যায় কার্যক্রম। এতে বন্দর সংশ্লিষ্ট সকলেই কর্মহীন সময় পাড় করছে। একই সাথে সরকার রাজস্ব আয় থেকে পিছিয়ে পড়ছে।
সরকারি ভাবে শুল্ককর বৃদ্ধি হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ভারত ও ভূটানের মাঝে স্ল্যট বুকিং নিয়ে ঝামেলার পর ভূটান পাথর দেয়া বন্ধ রাখলে ভারত থেকে আমদানি শুরু করে আমদানিকারকরা। তবে কি কারণে নতুন করে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে তার সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা তাপস কুমার সাহা।