রিপন মারমা রাঙ্গামাটি:
রাঙামাটিতে কয়েক দিন থেমে থেমে বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বেড়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি গেইট দিয়ে পানি ছাড়লেও বন্যার কোন উন্নতি হয়নি। এছাড়াও বিপুল এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়চার ও সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চল হ্রদের পানিতে ডুবে আছে। এত পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। দুর্গত এলাকার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জলকপাট দিয়ে পানি ছাড়া অব্যাহত থাকলেও এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
পানিবন্দি এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সংকট নিরসনে প্রশাসন পক্ষ হতে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। উপজেলা প্রশাসন থেকে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা যায, জেলায় ৪টি উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের জন্য ১৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে পার্যাপ্ত খাবার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় ৪ উপজেলার ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠায়, শ্রেণি কক্ষে পানি প্রবেশ করলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন।
বিদ্যালয়গুলোতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত করা না হলেও সেখানে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ না থাকা ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসার পথ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় কার্যত সেখানে কোন শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না।
অন্যদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট আড়াই ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে অপসারণ করা হচ্ছে ৪০ হাজার কিউসেক পানি। এছাড়াও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে আরও প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক পানি অপসরণ হচ্ছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে মোট ৬৫ হাজার কিউসেক পানি অপসারণ হচ্ছে।
বর্তমানে হ্রদে পানি রয়েছে ১০৮.৪৮ এমএসএল।রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান গণমাধ্যম’কে জানান, জেলার সবচেয়ে বেশি পানবন্দি অবস্থায় রয়েছে বাঘাইছড়িতে। সকল নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ত্রাণ সহায়তা এবং আশ্রয় কেন্দ্র খোলার জন্য।