বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে মনপুরার চাষী সাইফুলের সাফল্য
সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভোলার মনপুরা উপজেলার ৩নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্দীপ পাড়া ব্লকের তরমুজ চাষী মোঃ সাইফুল বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করে বেশ সাফল্য লাভ করেছেন। স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের আওতায় তিনি অসময়ে তরমুজ চাষ করেন।
অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি সাইফুল তরমুজ চাষ করেও বেশ লাভবান হয়েছেন। তার দেখাদেখি সবজি চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষে বেশ আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় সবজি চাষীদের। মনপুরা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের সহয়তায় অসময়ে তরমুজ চাষে চাষীদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে তরমুজ চাষে আগ্রহ জাগিয়েছেন।
সবজি চাষের পাশাপাশি বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করতে স্থানীয় সবজি চাষীদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়েছেন মনপুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মত বর্ষাকালে তরমুজ চাষ করেছেন সবজি চাষী মোঃ জাফরের জেষ্ঠ্যপুত্র মোঃ সাইফুল।
তরমুজ চাষে কৃষি অফিস প্রকল্পের সহায়তায় আর্থিক সহযোগীতা ও পরামর্শ দিয়ে চাষীদের উদ্ভুদ্ধ করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তরমুজ চাষী সাইফুল ৩৩ শতাংশ জমিতে বর্ষাকালীন উচ্চ মূল্য ফসল ফল (তরমুজ) উৎপাদন প্রদর্শনী প্রদর্শন করে তরমুজ চাষ করেছেন।
বর্ষাকালে সর্জান পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে বেশ লাভবান চাষী। ব্লাক বেবী কালো ও হাইব্রিড মধু মালা (হলুদ) দুই জাতের তরমুজ চাষ করেছেন চাষী। ৩৩ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষে খরচ হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা। জমিতে তরমুজ ধরেছে প্রায় ৫শতটি। প্রতিটি তরমুজ গড়ে ২ কেজি করে ওজন হবে।
তরমুজ উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ১হাজার কেজি। এরই মধ্যে তিনি বিক্রি শুরু করেছেন। তরমুজ খুব মিষ্টি ও সুস্বাধু। ক্রেতারা তরমুজ ক্ষেত (জমি) থেকে তরমুজ কিনে নিচ্ছেন। প্রতিকেজি তরমুজ ১২০টাকা/১৩০টাকা ধরে বিক্রি করছেন।
সেই হিসেবে ১লক্ষ ২০হাজার/৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন তরমুজ চাষী। খরচ বাদ দিয়ে ৩৩ শতাংশ জমিতে ১ লক্ষ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন চাষী। তরমুজ চাষ করে বেশ খুশি চাষী সাইফুল। অসময়ে তরমুজ চাষে বেশ সাফল্য অর্জন করেন তরমুজ চাষী।
তরমুজ চাষী সাইফুল বলেন, কৃষি অফিস বর্ষাকালে তরমুজ চাষে আমাকে উৎসাহিত করেছেন। আমি অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি ৩৩ শতাংশ জমিতে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। প্রথমে সর্জান পদ্ধতি মালচিং পেপারের সাহায্যে মাদা তৈরি করেছি।
১ সপ্তাহ পরে মাদায় চারা রোপন করেছি। সর্জান পদ্ধতিতে মাচায় চারা জালের উপর উঠিয়ে দিয়েছি। ৩ মাসের মধ্যে তরমুজ ধরা শুরু করেছে। আমি কম খরচে বেশ লাভবান হচ্ছি। আমার তরমুজ চাষ করতে শ্রমিক খরচ ৫ হাজার টাকা, মালচিং পেপার ৮হাজার টাকা,
বাশ ৬ হাজার টাকা, জাল ৩ হাজার টাকা ,তরমুজ বীজ ক্রয় ৬ হাজার টাকা, সার ও ঔষধ ৫ হাজার টাকা সর্বমোট খরচ হয়েছে ৩৩ হাজার টাকা। ৫শত পিচ তরমুজ বিক্রি করতে পারব ১লক্ষ ২০হাজার/৩০টাকা। খরচ বাদ দিয়ে আমার লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে।
তরমুজ চাষের পাশাপাশি লাউ, কোমড়া, সীম, করলা চাষ করেছি। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আহসান তাওহীদ বলেন, স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় অসময়ে সবজি চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষে চাষীদের পরামর্শ, সহায়তা ও উৎসাহ দিয়েছি।
মনপুরায় এই প্রথম বর্ষাকালে একজন চাষী তরমুজ চাষ করেছেন। ফলন ও বেশ ভালো হয়েছে। তরমুজ বিক্রি করে চাষী লাভবান হয়েছেন। বর্ষাকালে তরমুজ চাষে চাষীদের আগ্রহ বেড়েছে। আমরা চাষীদের আরও বেশী তরমুজ চাষে পরামর্শ দিব। আমাদের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।