ওরশের নামে নরসিংদীতে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাজার পূজা বন্ধের দাবি
নরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বারৈচা গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়ায় ফুলবাগান দরবার শরীফ নামের ভুয়া মাজারে ওরশ শরীফের নামে ভন্ডামি ও মাজার পূজা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। গত ২৮ ডিসেম্বর গণস্বাক্ষর সহ জেলা প্রশাসকের নিকট দেয়া লিখিত অভিযোগে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দরবার শরীফ নামের ভুয়া মাজারটিতে প্রতি বছর ১০ ও ১১ জানুয়ারি ওরশের নামে নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়। এছাড়া ওরশকে ঘিরে মদ, গাঁজার আড্ডা, নারী নিয়ে ফূর্তিসহ নানা ধরনের অপরাধীদের সমাগম ঘটে। ওরশের নামে শব্দ দূষণ ও পরিবেশ নষ্টের কারণে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটাসহ স্থানীয় মসজিদের মুসল্লীরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।
মাজারটির খাদেম মাসুম শাহ শিবপুর থানার জোড়াখুনের মামলায় জেলহাজতে থাকলেও এবছরও ওরশের নামে পরিবেশ নষ্টের আয়োজন করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। লাশবিহীন ওই ভুয়া মাজারের ওরশ বন্ধের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
সামনে এসএসসি পরীক্ষা ও সংসদ নির্বাচনোত্তর সময়ে সেখানে ওরশের নামে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ ইং সালের ১০ জানুয়ারি চাঁন মিয়া শাহ কলসীওয়ালা ফকিরের মৃত্যুর পর তাঁর দুই স্ত্রীর সংসারে লাশ দাফনের স্থান নিয়ে মতবিরোধ হয়। তাঁর দুই স্ত্রী একই গ্রামের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দুই বাড়িতে বসবাস করতেন। পরে সামাজিক সিদ্ধান্তে বারৈচা গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের উত্তরপাড়ায় প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের পুরাতন বসতবাড়ির আঙ্গিনায় তার লাশ দাফন করা হয় এবং সেখানে মাজার করা হয়।
অপরদিকে বারৈচা দক্ষিণপাড়া গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডে নতুন বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের বসতভিটার আঙ্গিনায় (মৃতের গোসলের স্থানের কলা গাছের উপর) করা হয় ফুলবাগান দরবার শরীফ নামের মাজার। এরপর হতে দুই জায়গায় গড়ে তোলা দুই মাজারে একই দিনে চলে আসছে ওরশ। নতুন বাড়ির মাজারের নাম দেয়া হয় ‘ফুলবাগান দরবার শরীফ।’ এই দরবার শরীফের প্রথম পীরজাদা হন প্রয়াত ফকির চাঁন মিয়া শাহের বড় ছেলে মাসুম শাহ।
মাসুম শাহ বর্তমানে শিবপুর মডেল থানার জোড়া খুন মামলার আসামি হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন। তার অবর্তমানে ওই মাজারের পীরজাদা ছোট ছেলে ফরিদ শাহ।