মহিলা অধিদপ্তরের কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
মহিলা অধিদপ্তরের কর্মীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে। এঘটনায় রোববার রাতে দশমিনা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতিত ওই নারী। নির্যাতনে স্বীকার মোসা. ফাতিমা বেগম উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ” জেন্ডার প্রমোটর ” পদে কর্মরত আছেন।
স্থানীয় সূত্রে যানা যায়, শনিবার সকালে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মোঃ মহিউদ্দিন এর মাধ্যমে মোসাঃ ফাতিমা বেগম এর ছেলের জন্ম নিবন্ধনের জন্য ৩-৪ মাস আগে আবেদন করেন। একাধিক বার জন্ম সনদের কপি চাইলে আজকাল বলে ঘুরায়। গত শনিবার সকালে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দাড়িয়ে জন্ম সনদ চাইলে মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এবং মহিউদ্দিন চুলের মুঠি ধরে মাটিতে শোয়াইয়া পাড়ায়। এই ভিডিও ধারন করলে মহিউদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতিমার ছেলেকে মারধর করে মেবাইল নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা হারুন খান, নুরুল হক ও রুবেল বলেন, বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মোঃ মহিউদ্দিন জন্ম নবন্ধনে ১ হাজার করে টাকা নেন এ নিয়ে বহুবার পরিষে চেয়ারম্যানের কাছে লিখত দেয়া হয়েছে। কোন প্রতিকার হয়নি। শনিবার সকালে আমাদের চোখের সামনে ফাতিমা আফাকে মহিউদ্দিন প্রকাশ্যে চুলের মুঠি ধরে মাটিয়ে শোয়াইয়া পাদিয়ে পাড়াইয়া ধরে মারধর করে। এ যেনো মধ্যযুগীয় সময়ে বসবাস করছি। তা না হলে এভাবে প্রকাশ্যে একজন মহিলাকে মারধর করতে পারেনা। এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার হওয়া দরকার।
এবিষয়ে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী কালাম বলেন, উদ্যোক্তা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ আসছে। আমি ডেকে মৌখিক বললেও কোন সংশোধন হয়নি। তার কর্মকান্ড সম্পর্কে বহুবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি। শনিবার মহিলা অধিদপ্তরের কর্মরত বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ” জেন্ডার প্রমোটর ” ফাতিমা বেগমকে প্রকাশ্যে পরিষদের সামনে মারধর কারার বিষয়টি লজ্জা জনক। আমি তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
নির্যাতনের শিকার ফাতিমা বেগম বলেন, আমি উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ” জেন্ডার প্রমোটর ” পদে কর্মরত আছি। বাল্যবিবাহ, কিশোরীদের গান ও নাচের প্রশিক্ষন দিয়ে থাকি। ৩-৪ মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দোক্তা মোঃ মহিউদ্দিন এর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করি ১হাজার টাকা চেয়েছিলো আমি দেইনি বলে আজকাল বলে ঘুরায়। গত শনিবার জন্ম সনদ চাইলে মহিউদ্দিন আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন এক পর্যায় আমাকে মাটিতে শোয়াইয়া চুলের মুঠি পাড়াইা মারধর করেন। এ বিষয়ে দশমিনা মহিলা অধিদপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা জেসমিন আফাকে জানালে তিনি আমাকে নিয়ে থানায় যান এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দোক্তা মোঃ মহিউদ্দিন এর কাছে মহিলা অধিদপ্তরের কর্মরত বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ” জেন্ডার প্রমোটর ” মোসাঃ ফাতিমাকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয় জানতে চাইলে তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেন। কেন মারধর কররেন এ বিষয় জানতে চাইলে কোন সঠিক জবাব দেননি।
দশমিনা উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের দয়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা জেসমিন বেগম বলেন, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দোক্তা মোঃ মহিউদ্দিন মহিলা অধিদপ্তর এর কর্বরত ” জেন্ডার প্রমোটর ” মোসাঃ ফাতিমা বেগমকে ছেলের জন্ম নবন্ধন চাওয়া এ ভাবে প্রকাশ্যে চুলেমুঠি ধরে নির্যাতন করার বিষয়টি দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইউএনও মহেদয়কে জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি পটুয়াখালী জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিং এ আছি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করবো।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, গত কাল রবিবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।