মোহাম্মদ এরশাদ,বাঁশখালী প্রতিনিধি:
পুরো নাম মির আহামদ। বয়স প্রায় ৫৬ বছর। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে স্বেচ্ছায় বিনা পারিশ্রমিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন আনোয়ারা,বাঁশখালী প্রধান সড়কের যানবাহন চলাচল। নিজের এবং পরিবারের কথা চিন্তা না করে যানজট নিরসনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বড় বড় যানবাহন ও
ব্যাটারি চালিত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এবং রাস্তা ছোট হওয়ার ফলে বর্তমানে গুনাগরী চৌমুহনীতে প্রতিনিয়তই যানজট লেগেই থাকে। একা মানুষ অন্যদিকে বয়সের ভার সব মিলিয়ে এখন তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও মানুষ যাতে অল্প সময়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন সর্বদা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন এই স্বেচ্ছাসেবী ট্রাফিক।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে স্বেচ্ছায় কাজ করে যাওয়া এই স্বেচ্ছাসেবী ট্রাফিক মির আহমদ বলেন, ‘আমি সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এখানে কাজ করি। বয়স হয়েছে তাই আগের মতো আর পরিশ্রম করতে পারি না।বড় ট্রাক কিংবা প্রাইভেট কার থেকে যা বকসিস পাই তাই দিয়েই সংসার চালাই।’
জানা যায় বাঁশখালী অটোরিকশা সিএনজি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি ইউনুসের হাত ধরেই মূলত এই ট্রাফিকের কাজে লিপ্ত হন মির আহমদ।শুরুতে লাইন ম্যানের কাজ করতেন তিনি।
পরবর্তীতে গুনাগরী চৌমুহনী যানজট নিরসনে বিনা পয়শায় সেচ্ছাসেবী ট্রাফিক হয়ে এখন অব্দি কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
মির আহমদ বাঁশখালী উপজেলার ৫ নং কালীপুর ইউনিয়নে ১ নং ওয়ার্ড পূর্ব গুনাগরী আলি আহমদের চতুর্থ সন্তান। তার এক ছেলে, তিন মেয়ে এবং স্ত্রী নিয়ে দিন শেষে জমা খরচ দিয়ে যা থাকে তাই দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে তাদের।কিন্তু তার পরেও কোনো আফসোস নেই মির আহমদের স্ত্রীর।
মির আহমদের স্ত্রী বলেন, আমার বিয়ের আগে থেকেই তিনি এসব কাজ করেন। কিন্তু তাকে কখনো বাধা দেয়নি। তিনি মানুষের কাছ থেকে যে টাকা পায়,তাই দিয়েই দুমোঠো ডাল ভাত খেয়ে বাকি জীবন কাটাতে চাই।সেই সাথে শেষ বয়সে আমার স্বামীর জন্য সরকারের কাছে একটু সুব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয়রা বলেন,মির আহমদ দীর্ঘ ১২ বছর যাবত রাস্তায় কাজ করতে দেখতেছি সরকারের পক্ষ হতে তাকে যদি একটা কর্মস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, অন্তত শেষ বয়সে একটু ভালোভাবে পরিবার নিয়ে বাঁচতে পারবেন তিনি।’